নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, যারা ইতিহাসকে অস্বীকার করে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমকর্মীদের চাকুরিচ্যুত না করার অনুরোধ জানিয়ে সব পত্র-পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মহামারির এ পরিস্থিতিতে মানুষ অত্যন্ত অসহায়। যারা বিভিন্ন কাজ করছেন, চাকুরি করছেন তারাও অসহায়। আমি অনুরোধ জানাই, এ পরিস্থিতিতে কাউকে যেন চাকুরিচ্যুত না করা হয়। সেইসঙ্গে সবার বেতন-ভাতাও যেন নিয়মিত পরিশোধ করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৭ জুন আমাদের ইতিহাসের অংশ, ছয় দফা আমাদের মুক্তির সনদ। এটি যারা পালন করে না, তারা প্রকৃতপক্ষে ইতিহাসকে অস্বীকার করে। কারণ ৭ জুন পালন করলে তো যে সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, তাকে স্বীকার করা হয়। সেটিকে অস্বীকার করার জন্যই তারা সচেতনভাবে ৭ জুন পালন করে না। কারণ, ইতিহাস বিকৃত করে তারা বলতে চায়— একজন শিঙা ফুঁকেছিল, সেটি শুনে সবাই যুদ্ধে গিয়েছিল এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। কিন্তু বিষয়টি তা নয়।
বহু আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু এদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৫১ সালে বঙ্গবন্ধু যখন জেলে ছিলেন, তখন কমরেড মনি সিংহকে চিঠি লিখেছিলেন যে, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করছি, আপনার এতে সমর্থন আছে কিনা? অর্থাৎ ১৯৫১ সালের আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই ঐতিহাসিক সত্যগুলোকে বিএনপি পালন করে না ইতিহাসকে অস্বীকার করার জন্য। কিন্তু যারা ইতিহাসকে অস্বীকার করে, তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। বিএনপিও ইতিহাসকে অস্বীকার করলে একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েই নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, ১৯৬৬ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন, তা ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যে বাঙালির মনন তৈরি করার জন্যই ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। সেটির ভিত্তিতেই ১৯৭০ সালে নির্বাচন হয়েছিল এবং এই নির্বাচনে জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল এবং তারই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন।
তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী এই দুর্যোগের সময় বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকদের সহায়তার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কাছ থেকে তালিকা পাওয়া গেলে আগামী সপ্তাহে আমরা সহায়তা প্রদানের জন্য তালিকা চূড়ান্ত করতে পারবো বলে আশা করছি। মন্ত্রী এসময় করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের দ্রুত আরোগ্য এবং করোনা ও এর উপসর্গে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপু এসময় গণমাধ্যমে ছাঁটাই বন্ধে মালিকদের প্রতি আহ্বানের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।