প্রত্যয় নিউজডেস্ক: করোনা মহামারীর ঘরবন্দি সময়ে অনলাইনকে পুঁজি করে অনেকেই ব্যবসা শুরু করেছেন। এতে সৃষ্টি হয়েছে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা। তেমনই দুজন তরুণ উদ্যোক্তার সাথে কথা হয়েছে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় বা কৌশল সম্পর্কে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শেখ নাসির উদ্দিন—
টাঙ্গাইলের করটিয়া সরকারি সা’দত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম খান। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করতে চেয়েছেন সব সময়। কিন্তু কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। তারমধ্যে দেশে করোনায় সবাই ঘরবন্দি হয়ে পড়ল। তবুও তিনি কিছু একটা করার কথা ভেবেছেন।
সেলিম খান বলেন, ‘ফেসবুকে এক বন্ধু শাড়ি বিক্রি করত। তার সাথে কথা হলে ফেসবুকে ‘টাঙ্গাই লের শাড়ির বাজার’ নামে পেজ খুললাম। সেই থেকে যাত্রা শুরু। ব্যবসার তখন কিছুই বুঝি না। সেই বন্ধু আমাকে পথ দেখায় আর সে পথে হেঁটে চলেছি এখন।’
তরুণ এ উদ্যোক্তা আরও বলেন, ‘পেজ খুলে প্রথম চার মাস কোনো সাড়া পাইনি। তবুও হাল ছেড়ে দেইনি। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে পেজের শাড়ির পোস্টগুলো শেয়ার দিয়েছি। তারপর ফেসবুকে টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছি। কোনো সাড়া না পেয়ে ভেঙে পড়েছিলাম।’
সেলিম বলেন, ‘হঠাৎ আগস্ট মাসের শুরুতে ২-৩টা শাড়ির অর্ডার পেলাম। প্রথম অর্ডারে ৭টা শাড়ি বিক্রি করি। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অর্ডার পাচ্ছি। এখন দিনে কম হলেও ১০টি অর্ডার পাই। টাঙ্গাইলের পাথরাইলে তৈরি অর্গেন্টি, প্লেইন (হাফ সিল্ক) কাটিং জামদানি, জুম শাড়ি, কোটা শাড়ি পাচ্ছেন ক্রেতারা। এতে মাস শেষে ১০ হাজার টাকার মত থাকে।’
ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেসাম আজাদ ইফতি। করোনায় কলেজ ও কোচিং বন্ধ। সারাদিন বাসায় বসে থেকে বিরক্ত। তাই ঘরবন্দি সময় কাটানোর জন্য ভাবলেন অনলাইনে ব্যবসা করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।
ইফতেসাম আজাদ ইফতি বলেন, ‘আমি তখন বগুড়ায়। তাই বগুড়ার দই দিয়েই শুরু করি। সাথে কিছু পোশাকও ছিল। তখন আমার পুঁজি ছিল ২৭ হাজার টাকা। বিশ পাতিল দই বগুড়া থেকে নেই। অবাক ব্যাপার হলো সেগুলো দুই দিনে সব বিক্রি করে ফেলি। প্রথমেই মানুষের এত সাড়া পাব ভাবতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ঠাকুরগাঁও শহরের ক্রেতারা আমার অনলাইন শপ ‘আনুশী’ থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। সঠিক সময়ে পণ্য পৌঁছে দিয়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমার এ উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন বাবা-মা। মেয়ে বলে তারা কখনো আমার কোনো কাজে বাঁধা দেননি।’
ইফতি বলেন, ‘শুরুটা দই দিয়ে করলেও এখন থ্রি পিস, কানের দুল, আংটি, ছেলেদের টি-শার্ট রয়েছে। কোনো দিন পাঁচটা আবার কোনো দিন দুইটা অর্ডার পাই। তবে দই দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আশা করি পাঁচ হাজারের মত থাকতে পারে। ব্যবসা আরও বাড়ানোর ইচ্ছা আছে। পরিবারের সহযোগিতা পেলে আমি সেটাও পারব।’