বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
বগুড়া প্রতিনিধি :
নেসকো বগুড়া অফিসের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ–১ এ কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিরাজ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, গ্রাহক হয়রানি এবং নিয়মিত ঘুষ দাবিসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় নতুন সংযোগ, লোড বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গ্রাহকসেবা সংক্রান্ত কাজে আর্থিক লেনদেন ছাড়া কোনো কাজ না করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক।
অভিযোগকারী জানান, মিরাজ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে থাকা জলেশ্বরীতলা ফিডারে কার্যত একটি অঘোষিত আর্থিক বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে, যার ফলে সেবা নিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে শুধু গ্রাহকসেবা ব্যাহতই হচ্ছে না, বরং নেসকোর প্রতি জনগণের আস্থাও মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
নেসকো বগুড়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে তিনি একই ফিডার ও একই ডিভিশনে দায়িত্ব পালন করছেন, যা নেসকোর রোটেশন নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রশাসনিক নিয়ম অনুসারে একজন কর্মচারীর দীর্ঘসময় একই স্থানে দায়িত্ব পালন অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য।
বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসানের অভিযোগের গুরুতর অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের গত ৬ অক্টোবরে জলেশ্বরীতলা ফিডারের তার স্ত্রীর পার্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক সংযোগে ৮ কিলোওয়াট থেকে ১৫ কিলোওয়াট বৃদ্ধির আবেদন করলে তিনি বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কাজটি সম্পন্ন করেননি। তিনি আরো জানান, পরে তা এক সপ্তাহে কোন সুরাহা না হওয়ায় তিনি জলেশ্বরীতলা ফিডারে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিরাজ বিশ্বাসের দারস্থ হলে, তিনি তার কাছে থেকে সরকারি ফি বাবদসহ অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। পরে মিরাজ বিশ্বাসের ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে দুই দফায় ৩ হাজার ৬৫ টাকা পাঠালে পরদিনই কিলো বাড়িয়ে দেন। এ সংক্রান্ত অডিও রেকর্ডিং এবং অর্থ লেনদেনের রসিদসহ প্রমাণাদিও ‘নর্থ ক্যাপিটাল নিউজ’ এর হাতে রয়েছে।
গ্রাহকরা দ্রুত এর প্রতিবিধান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে নেসকো বিতরণ বিভাগ-১ এর উপ সহকারী প্রকৌশলী মিরাজ বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু বলতে পারব না আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলুন।
নেসকো বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মন্নাফের কাছে জানা যায়, প্রায় ১০-১২ দিন আগে মিরাজ বিশ্বাসকে জলেশ্বরীতলা এলাকার ফিডারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, মিটারের লোড বাড়িয়ে নেয়ার ঘটনাটি আমি জানি। ওই গ্রাহক (মেহেদী হাসান) আমার কাছে প্রথমে এসেছিলেন। আমি তাকে আবেদনের প্রক্রিয়া জানিয়ে দিই। এরপর তিনি কার সাথে যোগাযোগ করেছেন, তার সাথে কি লেনদেন করেছেন তা কিন্তু আমাকে জানাননি। তাকে যদি হয়রানি করা হয়ে থাকে, সেটি আমাকে একবার তো জানাতে পারতেন। তবে টাকা নেয়ার খবরটি আমার কাছেও এসেছে। খবরটি শোনার পরপর তাকে ওই এলাকার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।