দৈনিক প্রত্যয় ডেস্ক: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ত্রাণ দিয়ে ছবি তুলে তা ফেরত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
রোববার ,৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বলিদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হতদরিদ্র ওই দুই মহিলার বাড়িতে মাধ্যমে ত্রান পৌঁছে দিয়েছেন।
জানা যায়, গত রোববার বিকালে পৌর এলাকার বলিদাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রাণ দেওয়ার স্থানীয় কর্মহীন পরিবারদের ডাকা হয়। পৌরসভার গাড়িতে করে এসব ত্রাণ নিয়ে আসা হয়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, ইউএনও সুবর্ণা রানী সাহা ও পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ ত্রাণ বিতরণ করতে মাঠে আসেন। পরে তাদের সামনে দেওয়া হয় ত্রাণের প্যাকেট। এরপর ত্রাণ বিতরণের ছবি তোলা হয়। ত্রাণ বিতরণ শেষে মাগরিবের আযান দেওয়ায় স্থানীয় সাংসদ ও পৌর মেয়র বিদ্যালয় মাঠ ত্যাগ করেন। সাথে সাথে ইউএনও চলে যান।
এরপর অসহায় কিছু ব্যক্তিদের বলা হয়, আপনাদের নাম তালিকায় নাই। পরে তাদের কাছ থেকে ত্রাণের প্যাকেট কেড়ে নেন বলিদাপাড়ার যুবলীগ নেতা সমীর হোসেন ও বাবরা গ্রামের লিটন আলী।
যুবলীগ নেতা সমীর হোসেন বলিদাপাড়া গ্রামের মৃত হাতেম দফাদারের ছেলে। সে কালীগঞ্জ পৌর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য।
ভুক্তভোগী বাহাদুর মন্ডলের স্ত্রী সুন্দরী খাতুন জানান, আমার স্বামীর বয়স প্রায় ৮০ বছর। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। একটা মাত্র ছেলে ভাংড়ির ব্যবসা করে। অনেকদিন ধরে কাজে যেতে পারছে না। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করি। সেখান থেকে যা পাই সেটা দিয়েই চলি। গত রোববার চাল দেয়ার পর আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সমীর নামের একজন চাল কেড়ে নেয়। একটা মেয়ে ছবি তুলছিল। ছবি তোলার পর চাল গাড়িতে করে নিয়ে যায়।
আরেক ভুক্তভোগী বলিদাপাড়া এলাকার সাদ্দাম হোসেন বলেন, ছোট থাকতেই বাবা মারা গেছে। বড় ভাই ইজিবাইক চালায়। করোনার মধ্যে সেটিও চালাতে পারছে না। আমি ড্রাইভার ছিলাম। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সমীর হোসেন ছবি তোলার পর ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, তালিকায় নাম না থাকায় তাদের ত্রাণ নিয়ে অন্যদের দেওয়া হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা বলেন, আমি গিয়েছিলাম সেখানে। ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।