১০ বছর আগে জার্মানির সব নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ সেই লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেলেও এখন কাজের অগ্রগতি মন্থর হয়ে গেছে বলে মনে করেন ডয়চে ভেলের ইয়েন্স থুরাউ৷
বার্লিন থেকে করা এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপান থেকে যখন দুঃসংবাদটা আসতে শুরু করে, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তখন নিজের দপ্তরে কাজ করছিলেন৷ ফুকুশিমায় ভূমিকম্প আর সুনামির আঘাতের ছবি দেখলেন তিনি, দেখলেন পারমাণবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ চিত্র৷ সেসব দেখে তিনি এমন এক কাজ করে বসলেন যা সবসময় জনমতের ভিত্তিতে কাজ করতে অভ্যস্ত জার্মানিতে সচরাচর হয় না৷ জার্মানিতে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের সব উৎস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন একা৷ তার দল তা চায়নি, জোটসঙ্গী দল চায়নি, তারপরও ম্যার্কেল ঠিক করলেন একে একে দেশের সব নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করবেন৷
১০ বছর আগের সেই দিনে জার্মানিতে পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্র ছিল মোট ১৭টি৷ এখন আছে ছয়টি৷ জার্মান সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২২ সালের মধ্যে জার্মানির সব নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যাবে৷
কিন্তু ফুকুশিমার দুর্ঘটনার কয়েক মাস আগেই দেশের সব নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টরের জীবনকাল বাড়িয়ে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলি বন্ধ করার প্রক্রিয়াকে মন্থর করার পথেই এগোতে শুরু করেছিল জার্মানি৷ সেখান থেকে হঠাৎ উল্টোপথে চলার সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ ছিল না মোটেই৷ ম্যার্কেল সরকার তারপরও বায়ু ও সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ এবং সেই সাথে সব নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বন্ধের পরিকল্পনা করেছিল৷ ১০ বছর পর সেই কাজে কি ছুটা মন্থর ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷
অবশ্য জার্মানির মানুষ সাধারণভাবে খুব পারমাণবিক শক্তিবিরোধী৷ তাই এতদিন কিছু মানুষ যদিও বলে এসেছে জার্মানির মতো একটি শিল্পোন্নত দেশ শুধু বায়ু এবং সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখা যাবে না, তারপরও অন্তত ১১টি নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে৷
সূত্র : ডয়েচে ভেলে।
আরও পড়ুন : বিশ্বাস ফেরাতে ২৪ ঘণ্টা হাতকড়া