ওয়েব ডেস্ক: সরকারের সেবাসমূহকে ই-সেবায় রূপান্তরের মাধ্যমে জনগণের কাছে দ্রুত ও সহজে পৌঁছে দেওয়া এবং সব ক্ষেত্রে আইসিটির ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো স্থাপন করা হবে। এজন্য ‘ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫ হাজার ৮৮৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এটিসহ ২৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন প্রকল্পের আওতায় প্ল্যাটফর্ম এবং ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি সেন্টার অব এক্সিলেন্স স্থাপন, জেলা ও উপজেলা কমপ্লেক্সে আইটি অবকাঠামোসহ মাঠ পর্যায়ের ক্লাউড ফাইল সার্ভিস এবং ডিজিটাল স্টোরেজের জন্য কেন্দ্রীয় সার্ভার অবকাঠামো স্থাপন করা হবে। আইসিটি ল্যাব, স্মার্ট ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং ডিসটেন্স লার্নিং প্ল্যাটফর্মসহ প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো সুবিধা সম্বলিত একটি ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন করা হবে।
মাঠ পর্যায়ে ৫ হাজার ৫০০টি এনরোলমেন্ট অবকাঠামো স্থাপন এবং ১৭ হাজার ৩১৪টি সার্ভিস ডেলিভারি ডিভাইস বিতরণ, ১০টি ডিজিটাল ভিলেজ স্টেশন, ৪৯২টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে। একনেক সভায় ১১৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘অবকাঠামোগত পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১১৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
আরিচা (বরঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-৫০৬) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে টাঙ্গাইল জেলা পর্যন্ত ৫৮.৫০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন, যানজটমুক্ত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন এবং প্রকল্প এলাকার পশ্চাৎপদ জনগণের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।
১৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নড়াইল শহরাংশের জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভাটিয়াপাড়া-কালনা-লোহাগড়া-নড়াইল-যশোর জাতীয় মহাসড়কের নড়াইল শহরাংশের সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নীতকরণের মাধ্যমে যানজট নিরসন এবং নড়াইল শহরের মধ্য দিয়ে যানজটমুক্ত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
৩ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প’ সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় টেকসই গ্রামীণ পরিবহন ও বাজারসেবা প্রবর্তনের লক্ষ্যে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়ন এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যকর বিনিয়োগ ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ দক্ষ অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
১ হাজার ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৬ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক পাকাকরণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। গ্রামীণ বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে জনগণের যাতায়াত সুবিধা বাড়ানোর মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং প্রকল্প এলাকায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। হাওর সহিষ্ণু অবকাঠামো উন্নয়নপূর্বক হাওর অঞ্চলে সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা জেলার পোল্ডার নং-১৪/১ পুনর্বাসন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় খুলনা জেলার অন্তর্গত পোল্ডার নং ১৪/১ এর বাঁধ ও অন্যান্য অবকাঠামোসমূহ পুনরুজ্জীবিত করে পোল্ডারটির কার্যকারিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রকল্পভুক্ত এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ সুবিধা প্রদান ও লবণাক্ততা দূর করা, কৃষি/মৎস্য উৎপাদন নির্বিঘ্ন করার মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং নদী ভাঙন ও বন্যার কবল থেকে এলাকার অবকাঠামো রক্ষা করা হবে।
৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন অবকাঠামোসমূহের পুনর্নির্মাণ ও পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ঝুকিঁ ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণ করা হবে।
সংশোধিত আকারে মাতারবাড়ি ২×৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।