প্রত্যায় ডেস্কঃ বাংলাদেশে ধীরে ধীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেডে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে পুরো দেশ লকডাউন ও সরকারের শক্ত অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) এর অডিটোরিয়ামে এক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা। এ সময় সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে তার বিস্তার বৃদ্ধি করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আরও ২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪ জন মারা গেছেন।
দেশ লকডাউনের বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে বিশেষজ্ঞদের আশ্বস্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
যদিও দুপুর ২টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এ সময়ের মধ্যে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৫।
জাহিদ মালেক বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন আমাদের সবার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনভাবেই আগামী ১৫ দিন আমরা যেন কেউই অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হই। আর একান্তই যদি জরুরি কাজে বের হতেই হয় তাহলে মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে বের হবো। সে ব্যাপারে আমাদের সবারই সচেতন থাকতে হবে।
দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গত ২৬ মার্চ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি। এ ছুটির মধ্যেই শুরুর দিকে ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও গত দুই-তিনদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রায় জ্যামিতিক হারে। গত তিন দিন ধারাবাহিকভাবে ৯, ১৮ এবং সর্বশেষ ৩৫ জন আক্রান্তের সংখ্যায় বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সভায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের (নিমস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বর্তমান পরিস্থিতে তার উদ্বেগ জানিয়ে এখনি দেশে ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ার অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর জানান, দেশে সামনে কঠিন সময় আসছে। এখনই পুরো দেশে লকডাউন করা জরুরি। এখনই পুরো দেশ লকডাউন না করা হলে এই ভাইরাস আগামী ১০ দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে শক্ত অবস্থানে যাওয়ার অনুরোধ জানান, জানানো হয় মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।
সভায় চিকিৎসক পরিষদ নেতারা চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার ব্যাপারেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, স্বাচিপ সভাপতি ইকবাল আর্সেনাল, সাধারণ সম্পাদক এম এ আজিজসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতারা।