নিজস্ব প্রতিবেদক: রাত ৯টা ২৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ঘটে গুলির ঘটনা। এরপরই ওসিকে ফোন দেন লিয়াকত। রাত ৯টা ৩৩ মিনিটে এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেনকে ফোন দেন ওসি প্রদীপ।
টেলিফোনে ওসি বলেন, ‘স্যার, লিয়াকত নাকি গুলি করেছে, আমি যাচ্ছি সেখানে। এই যে স্যার লিয়াকত চেকপোস্টে একটি গাড়িকে সিগন্যাল দিছে। গাড়ি থেকে তাকে পিস্তল দিয়ে গুলি করছে। আমি বললাম, তুমি তাড়াতাড়ি ওকে গুলি করো। সেও নাকি গুলি করছে স্যার। আমি যাচ্ছি ওখানে স্যার।’ তখন এসপি মাসুদ বলেন, ‘যান যান।’ এরপরই রাত ৯টা ৩৪ মিনিটে লিয়াকতও এসপিকে ফোন করেন।
লিয়াকত বলেন, ‘স্যার, এখানে একটা প্রাইভেট কার ঢাকা মেট্রো লেখা। আর্মির পোশাকটোশাক পরা। সে ওই বোরকা খুলে ফেলছে। পরে তাকে যখন চার্জ করছি, মেজর পরিচয় দিয়ে গাড়িতে চলে যেতে চাইছিল। পরে অস্ত্র তাক করেছিল, আমি গুলি করছি স্যার। একজন ডাউন করছি, আরেকজন ধরে ফেলছি স্যার। আমি কী করব স্যার? আমাকে পিস্তল তাক করছে? পিস্তল পাইছি তো স্যার।’
পরিদর্শক লিয়াকতের এই বক্তব্যের পর পর এসপি মাসুদ বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে। তোমারে গুলি করছে, তোমার গায়ে লাগেনি, তুমি যেটা করছ সেটা তার গায়ে লাগছে।’ তখন লিয়াকত বলেন, ‘রাইট স্যার।’
পুলিশ আটক করার পর সিফাত যে বক্তব্য দিয়েছেন সেখানেও দুই পক্ষের অস্ত্র তাক করার তথ্য নেই। প্রকাশ পাওয়া সিফাতের একটি জবানবন্দিতে দেখা গেছে, তিনি বলেছেন, পথ আটকানোর কারণে সিনহা রাশেদ রেগে যান। তবে তিনি অস্ত্র নিয়ে গুলি করা তো দূরের কথা গুলি তাকও করেননি। সিফাত বলেন, ‘লিয়াকত সাহেবের সঙ্গে ডিবির দুই লোক ছিল। বাকিরা ইউনিফর্মে। পুলিশ রাগারাগি করে সিনহা ভাইকে গুলি করে। তখন আমরা সামনের দিকে যাচ্ছিলাম।’
অডিওতে শোনা যাচ্ছে, ওসি প্রদীপ এসপি মাসুদকে বলেন, সিনহা রাশেদ গুলি করায় তাঁর নির্দেশে লিয়াকত গুলি করেন। তবে লিয়াকত এসপিকে বলেন, সিনহা রাশেদ গুলি তাক করেছিলেন। এসপি মাসুদ তখন ওসি প্রদীপের সুরে লিয়াকতকে বলেন, ‘তোমারে গুলি করছে, তোমার গায়ে লাগেনি, তুমি যেটা করছ সেটা তার গায়ে লাগছে!’ এর মাধ্যমে ওসির সাজানো মামলায় এসপি সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।