করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বিশ্বের প্রায় ১৭টি দেশে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এবার ফ্রান্সেও পাওয়া গেল সেই ধরন। দেশটিতে ভারতীয় ধরনের করোনায় তিনজন আক্রান্ত হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে বি.১.৬১৭ নামক এই ধরনের খোঁজ কয়েক দিন আগেই মিলেছে। এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনার এই ভারতীয় ধরনে তিনজন ফরাসি নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম ভারতীয় ধরন ধরা পড়ে দক্ষিণ পশ্চিম ফ্রান্সের এক নারীর। সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন তিনি। গত বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করে ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাকি দুজনও নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ফ্রান্সে যান। তারা দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের বাসিন্দা।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ফ্রান্সের যেসব ক্যাফে রেস্তোরাঁ আছে, তা এবার ধীরে ধীরে খোলা হবে। কারণ, দেশটিতে করোনা সংক্রমণ রোধে এক মাসের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা করা হয়। আগামী ১৯ মে থেকে বেশকিছু বিধিনিষেধ মেনে মিউজিয়াম, সিনেমাহল ও থিয়েটার খুলবে। চার ধাপে ধীরে ধীরে সবকিছু ফের স্বাভাবিক করা হবে। অর্থনীতি বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
তিনি আরও বলেন, ফ্রান্সে প্রথমে স্কুল ও নার্সারিগুলো খোলা হবে। কারণ আমরা শিক্ষার ওপর জোর দিতে চাইছি। করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচার পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স প্রশাসন।
এদিকে করোনা মোকাবিলায় ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ফ্রান্স। অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে অক্সিজেন জেনারেটরসহ তরল অক্সিজেনের কন্টেইনার পাঠাচ্ছে দেশটি। চলতি সপ্তাহ শেষের দিকে আকাশ ও সমুদ্র পথে ভারতে এসে পৌঁছাবে দেশে।
ভারতকে ৮টি অক্সিজেন জেনারেটর পাঠাবে ফ্রান্স। এগুলো ১০ বছরের জন্য একটি হাসপাতালকে স্বনির্ভর করে তোলে। এক একটি জেনারেটর ২৫০ বেডের একটি হাসপাতালের অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। ৫ দিন চলবে এমন ২ হাজার করোনা আক্রান্তের জন্যে লিকুইড অক্সিজেন। ২৮টি ভেন্টিলেটর ও আইসিইউর বিভিন্ন মেডিক্যাল সরঞ্জাম পাঠাবে ফ্রান্স।
এর আগে বিশ্বের প্রায় ১৭টি দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেল ডব্লিউএইচও। দেশগুলো হলো- যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও কম্বোডিয়া।
ভারতে করোনার যে প্রজাতিটি পাওয়া গেছে সেটা হলো-‘বি.১.১৬৭’। নিজের বৈশিষ্ট্য পাল্টে মারাত্মক হয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন এই স্ট্রেন। এটি ভ্যাকসিনের প্রভাবকেও হার মানিয়ে দিচ্ছে। ভাইরাসের এই ধরনে ভারতে এখন ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্ত। হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভরে গেছে।