বগুড়ার সংবাদদাতাঃ বগুড়ায় ইয়াবা, হেরোইন ও ফেন্সিডিল সেবিদের কাছে এখন টাপেন্টা, লোপেন্টা, সিনামিন জাতীয় এসব ব্যাথানাশক ঔষধের চাহিদা বেড়ে গেছে। পুলিশ প্রশাসনের তদারকির কারনে ইয়াবা, হেরোইন, ফেন্সিডিল জাতীয় মাদকগুলো সহজে পাওয়া যাচ্ছে না ও দাম বৃদ্ধির কারনে এসব ঔষধকে মাদক হিসেবে ব্যবহার করছে বেশিরভাগ মাদকসেবি। সহজলভ্যতার কারনে অনেক তরুণ এই নেশার প্রতি আকর্ষিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় বাজারে এসব ট্যাবলেট ও সিরাপের ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগে বেশি লাভের আশায় কয়েকগুন বেশি দামে এসব ঔষধ বিক্রি করছেন মাদক সেবিদের কাছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে টাপেন্টা ৫০মিঃগ্রা প্রতি পিছ ট্যাবলেট ৫০ থেকে ৭০ টাকায় ও ১০০ মিঃগ্রাঃ প্রতিপিছ ট্যাবলেট ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে, যেখানে ৫০মিঃগ্রাঃ এর বিক্রয় মুল্য ১২ টাকা ও ১০০মিঃগ্রাঃ এর বিক্রয়মূল্য ২২ টাকা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে ব্যাথা নাশক ঔষধ ” টাপেন্টাডল হাইড্রোক্লোরাইড” ঘরানার ঔষধটি অপসোনিন, গ্লোব, এসকেএফ সহ ৭/৮ টি কোম্পানি প্রায় ৩০ টি ব্রান্ড নামে ৫০,৭৫ ও ১০০ মিঃগ্রাঃ ডোজে বাজারজাত করে আসছে। স্কয়ারের রিপ্রেজেনটেটিভ এর সাথে কথা বলে জানা যায় তারা এই জাতীয় পেন্টাডল নামক ট্যাবলেটের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদকসেবি জানায়, ইয়াবা/হেরোইনের বিকল্প হিসেবে তারা টাপেন্টা,লোপেন্টা জাতীয় ঔষধ গুরো করে ইয়াবা/হেরোইনের মতো পুড়িয়ে সেবন করে। দামে কম, সহজলভ্য ও একইরকমের নেশা হয় বলে তারা এসব ব্যবহার করে। সে আরও জানায় যে ইবনে সিনা’র সিনামিন নামক সিরাপ এর সাথে এসব ট্যাবলেট গুরো করে মিশিয়ে তারা ফেন্সিডিল এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে। সি আই ডির ল্যাব টেস্টে টাপেন্টাডল এ ইয়াবার উপাদান আমফিটামিন পাওয়া গেছে।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ইমতিয়াজ আল সাফী জানান যে, টাপেন্টাডল হাইড্রোক্লোরাইড মূলত ব্যাথার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। বেশিদিন ব্যবহার করলে এটির প্রতি হেরোইন এর মতো আসক্তি তৈরী হয়। এটি নেশা হিসেবে ব্যবহার করলে কিডনি ড্যামেজ, লিভার ড্যামেজ, ব্রেন স্ট্রোক এমনকি হার্ট এটাকে মৃত্যু হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিনামিন সিরাপ সাধারণত ঠান্ডা, এলার্জি, জ্বরের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, এর সাইড ইফেক্ট হিসেবে স্নায়বিক অনুভব, বুকে নিবিড়তা, ঝাপসা দৃষ্টি হতে পারে।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ঔষধ কেন বিক্রি করছেন জানতে চাইলে বগুড়ার চেলোপাড়ার এক ঔষধের দোকানদার বলেন যে, কেউ কেউ রিকুয়েষ্ট করে আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাব দেখায় তাই তারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা শহরজুড়ে চেলোপাড়া, খান্দার, কলোনী, জহুরুলনগর ও খান মার্কেটের কয়েকটি দোকান সহ শহরের বিভিন্ন দোকান এবং জেলার ১২ টি উপজেলার বেশকিছু স্থানে বেচাকেনা চলছে ইয়াবা, হেরোইন ও ফেন্সিডিলের বিকল্প এসব ব্যাথা নাশক ঔষধ।
বগুড়ার নবাগত ডিসি মহোদয় ও সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে নতুন প্রজন্মকে এসব মাদক থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা করবেন বলেই সুচিন্তিত নাগরিকগন আশা করছে। কারণ ইতোপূর্বে নতুন বাড়ি নির্মাণে চাদাবাজি বন্ধের মতো অনেক জনবান্ধব পদক্ষেপ তাদের কাছ থেকে পেয়েছে জনগণ ।