1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০
  • ১৪০ Time View
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি

প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুরের নদনদীতে পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও এই তিন জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। এই পাঁচ জেলায় সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। নদীভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে বহু মানুষ। সরকারি সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া মধ্যাঞ্চলের ৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর :

টাঙ্গাইল : জেলার সব কটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টাঙ্গাইলে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। একদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক অন্যদিকে পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে যমুনা, ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার সদর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর ও নাগরপুর উপজেলার নদীতীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া, হুগড়া, কাতুলী, মামুদনগর, ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী, নিকরাইল, কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুর, গোহালিয়াবাড়ি, সল্লা, দশকিয়া; গোপালপুর উপজেলার হেমনগর, নগদাশিমলা, ঝাউয়াইল এবং নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ, ভাড়রা, মোকনা, পাকুটিয়া ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম সম্পূর্ণ ও গ্রাম শতাধিক আংশিক প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত ও চরাঞ্চলের মানুষ তাদের বাড়ির ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ক্রমাগত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে টাঙ্গাইলের যমুনা, পুংলী, ঝিনাই, বংশাই ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাাবিত হচ্ছে। এতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পানিবন্দি মানুষ। বিভিন্ন বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকরা গবাদিপশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। গবাদিপশু নিয়ে রাত কাটাচ্ছে একসঙ্গে। এসব স্থানে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে, ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে নদী তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ক্রমশ বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। এছাড়াও জেলার অভ্যন্তরীণ নদনদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল। সিরাজগঞ্জে পাঁচটি উপজেলার ৩১টি ইউনিয়নের ২৪ হাজার ৯২৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যায় পাঁচটি উপজেলার ৩১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার ২১৬টি গ্রামের ২৪ হাজার ৯২৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ২৮০টি ঘরবাড়ি আংশিক, ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম : ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় জেলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের। গত এক সপ্তাহের অব্যাহত বন্যায় কর্মহীন হয়ে পড়া বানভাসি অনেক পরিবারের ঘরে খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছেন তারা। সরকারিভাবে ত্রান তৎপরতা শুরু হলেও অপ্রতুলতার কারনে অনেকের ভাগ্যে জুটছে না তা। জেলার ৯ উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ৬শ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলসহ সবজি ক্ষেত। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার পারবতীপুর চরের মজির আলী জানান, গত ১ সপ্তাহ ধরে পারবতীপুর চরের সব ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। বাড়িতে শুকনো জায়গা না থাকায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে তাদের। একই চরের সবিরন, রব্বানী জানান, প্রতিবছর বন্যার আগে কিছু খাবার ঘরে মজুদ রাখতেন তারা। কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারনে দীর্ঘ সময় কর্মহীন হয়ে পড়ে আছেন তারা। তাই ঘরের সামান্য খাবার শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে ধারদেনা করে একবেলা খেয়ে না খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন পার করছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় গো খাদ্যের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি সামান্য কমলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আগাম বন্যায় জেলার চার উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় খাদ্য, সুপেয় পানি, নিরাপদ আশ্রয়সহ নানা সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ। একই সঙ্গে কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। বন্যার পানি কিছুটা কমলেও পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে স্যানিটেশন সমস্যাও। ঘরে পানি, খাদ্য সঙ্কট আর নদীভাঙনে অস্থির মানুষজনের মাঝে শুরু হয়েছে আহাজারি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত পরিবারগুলো এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পায়নি বলে অভিযোগে করেছেন। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দের একটি খাদ্যের দানাও বন্যা দুর্গতদের মাঝে পৌঁছেনি বলে তাদের অভিযোগ। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, বুধবার ব্রহ্মপুত্রের পানি ৭৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ফসলসহ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে চীনা বাদাম, আউশ ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগ ১০৫ একর উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরি করেছে।

জামালপুর : যমুনা নদীর পানি হ্রাস পেলেও জামালপুরে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় জেলার ৭টি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়ন ও ৮টি পৌরসভার ৩ লাখ ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বুধবার বিকাল ৩টার দিকে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে জেলার ৭টি উপজেলায় ১০ হাজার ১৯১ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মধ্যাঞ্চলের ৪ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা
পদ্মা অববাহিকায় নদনদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকতে পারে। ইতোমধ্যে পদ্মার গোয়ালন্দ অংশে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। অন্যদিকে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। বুধবার দুপুর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..