খোকন হাওলাদার, গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ করে বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ইলিশ শিকারে নামবে জেলেরা। প্রজনন মৌসুম সফল দাবি করে এ বছর ৪ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হবে বলে দাবি মৎস্য বিভাগের।
এদিকে ২১ দিনের অভিযানে বরিশাল বিভাগে ৯৮৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে মাছ শিকারের দায়ে ১ হাজার ১৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়।
এসব মামলায় ১ হাজার ৫৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অর্থদণ্ডে মোট ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে মোট ৭৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ৯ হাজার ৫শ’ কেজি ইলিশ মাছ উদ্ধার করা হয়।
জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস জানান, গত বছরের তুলনায় এবার নদীর পরিবেশ ভালো ছিল। এবার যে পরিমাণ মা ইলিশ ডিম অবমুক্ত করার সুযোগ পেয়েছে, তাতে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সমন্বয় করে এবার ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিপনন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনিচুর রহমান জানান, প্রজনন মৌসুমে প্রতিটি মা ইলিশ ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়তে সক্ষম এবং অবমুক্ত ডিমের ১০ ভাগ মাছে পরিণত হবে। দেশে উৎপাদিত ইলিশের ৭০ ভাগ আহরণ হয় মেঘনা নদীর ভোলার শাহবাজপুর, বরিশালের তেতুলিয়া ও পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীর ৩৫০ কিলোমিটার এলাকার ৫টি অভয়াশ্রম থেকে। এ সকল অভায়শ্রমে ৬শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১শ’ গ্রামের বেশি ডিম ধারণ করে। প্রতিটি ডিমে ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম্বানু রয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে অধিকাংশ মা ইলিশ নদীতে অবমুক্ত করে।
প্রজনন মৌসুম সফল হওয়ায় এ বছর ৪ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকার জানান, অভিযানকালীন সময়ে বিভাগের ২ লাখ ৮২ হাজার জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। জেলেরা সচেতন হওয়ায় এবার নিষেধাজ্ঞাকালীন তারা নদীতে মাছ শিকারে নামেনি। এ কারণে এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন তিনি।