নিজস্ব প্রতিবেদক: মানুষের জীবন-জীবিকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে গণমুখী ও কল্যাণমুখী বাজেট উত্থাপিত হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ঠিক তেমনি বাজেট প্রণয়নের আগে দীর্ঘ সময় নিয়ে অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ নিয়েছেন। অর্থনীতিবিদ ছাড়াও অভিজ্ঞদের পরামর্শ, গবেষণা ও পার্টির ইশতেহারের সঙ্গে সমন্বয় করেই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।
রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বাজেট প্রণয়নে পরামর্শ নেওয়া হয় না বলে বিএনপি মহাসচিব যে মন্তব্য করেছেন তা সত্যের অপলাপ মাত্র বলেও দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, জীবন ও জীবিকায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে গণমুখী ও কল্যাণমুখী বাজেট জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার উত্থাপিত হবে।
অসচেতনতার কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেশি করে শুরু হলে সরকার কঠিন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের ক্রমঅবনতিশীল এই পরিস্থিতি নতুন করে যেসব স্থানে লকডাউন করা হয়েছে, সেখানে সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই সিদ্ধান্ত আপনার, আমার, আমাদের সবার কল্যাণেই নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আর যেসব এলাকা লকডাউনের আওতামুক্ত, আপনারা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি যদি আরও অবনতি হয়। যদি আবার সেকেন্ড ওয়েব শুরু হয় তাহলে দেশের সব এলাকায় সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। পরিস্থিতি আর অবনতি না ঘটিয়ে আসুন আমরা বিশ^ স্থাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। সবার সমন্বিত প্রয়াসে এই দুঃসময় কেটে যাবে। করোনা সঙ্কট থেকে মুক্তি পাব, এটাই প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে হেমায়েতপুর হতে গাবতলী-মিরপুর ১০-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান ২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল রুটের বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক নিয়োগের চুক্তি সই হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যুক্ত হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মি. ইতো নাওকি।
এ সময় সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা মহানগরী ও পাশর্^বর্তী এলাকার যানজট নিরসনে উড়াল ও পাতালসহ ছয়টি মেট্রোরেল রুট নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত রুট-৫ এর নর্দার্ন অংশের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে সাড়ে তের কিলোমিটার পাতাল এবং সাড়ে ছয় কিলোমিটার হবে উড়াল। এ রুটটি নির্মাণে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে জাপান সরকারের অর্থায়ন প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা বলে জানান মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রো রুট-৬ এর চলমান কাজের শতকরা ৪৫ ভাগ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি কাজের গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে এ রুটে ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং এক কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়াসহ মেট্রোরেলের বিভিন্ন রুটের প্রকল্প পরিচালক, প্রকৌশলী, কর্মকর্তা এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।