“STAY HOME” দেশে এই অনুরোধ অমান্য করছে কারা ?
—————————————————————
তৃতীয় বিশ্বের মধ্যম আয়ের ঘনবসতিপূর্ন দূর্নীতিগ্রস্ত একটি দেশ বাংলাদেশ।
আসুন নিজের চোখে নয় বরং সেই অনুরোধ অমান্যকারীদের চোখ দিয়ে ব্যাপারটা একটু দেখে আসি………
[]রিক্সাওয়ালা ,ঠ্যালাওয়ালা, ফুটপাতের পন্যের পসরা নিয়ে বসা হকার, কুলি,মজুর যাদের প্রতিদিন কাজে না গেলে পরিবারের তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা নাই তারা “STAY HOME” এর মানে বুঝতে চায় না।
[]পোশাক,পরিবহন, কারখানা ও অন্যান্য খাতের শ্রমিক যারা সকালে ঘুম ভেঙ্গেই কর্মস্হলে না দৌড়ালে তিনবেলা খাবার আর ঘর ভাড়া দিতে পাড়বে না তারা “STAY HONE” এর মানে বুঝতে চায় না।
[]সরকারী বেসরকারী চাকুরীজীবি যাদের কোন ব্যাংক ব্যালেন্স নাই, শুধুই মাসিক বেতনের টাকায় সংসার চালাতে হয় তারাও জীবিকার তাগিদে আর চাকুরী হারানোর ভয়ে “STAY HOME” এর মানে বুঝতে চায় না।
[]গৃহহীন ভিক্ষুক,উন্মাদ আর পথশিশুরা আসলেই “STAY HOME” এর মানে বুঝে না।
[]জেল হাজতের নোংরা অস্বাস্থ্যকর গিন্জি পরিবেশে থাকা সাজাপ্রাপ্ত বা প্রক্রিয়াধীন আসামিদের কাছে “STAY HOME” এর কোন মানে নেই।
[]দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি গার্মেন্টস শিল্পের বিলিয়ন ডলারের বড় বড় বিদেশী অর্ডার ক্যান্সেল হয়ে মালিকপক্ষের সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ পোশাক শ্রমিকের নি:স্ব হয়ে একেবারে পথে বসে পড়ার সিচ্যুয়েশনে এই সেক্টরের মালিক কর্মচারীদের কাছে “STAY HOME” এর মানে হলো মরনফাঁদ,
তাই তাদেরকে বুঝেও না বুঝার ভান ধরতে হয়।
[]দেশের হসপিটালগুলিতে পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট বিহীন জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা চিকিৎসকদের কাছে “STAY HOME”এর কোন মানে নেই।
[]আর কিছু অদ্ভূত অতিবিশ্বাসী-অতিনিশ্চিত মানুষ,গুজব-গজবে বিশ্বাসী মানুষ আর বিদেশ ফেরত ফেরারী প্রবাসির কাছে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা এখনো ইয়ার্কি ফাইজলামীর পর্যায়ে।এরা সব জেনেশুনেও সতর্কতার সকল বিধিনিষেধ অমান্য করে ভাইরাসের সামাজিক বিস্তারে বড় ভূমিকা রাখছে।
এদের কাছেও “STAY HOME” কোন অর্থ বহন করে না।
করোনা ভাইরাসের মতো বায়োলজীক্যাল ডিজাস্টারে সবচেয়ে প্যাথোটিক যে ঘটনাটা ঘটতে পারে তা হলো দ্বিমুখী সর্বনাশ।
প্রথমত:- বৈশ্বিক রোগ সংক্রমন বিস্তারে বৃহদাকার জীবননাশের সম্ভাবনা।
দ্বিতীয়ত:- সংক্রমন প্রতিরোধে লক-ডাউনের ফলে বৃহৎ মাত্রায় কর্মহীনতায় বিশাল অর্থনৈতিক ধসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে ধুকেধুকে নি:শেষ হওয়ার সম্ভাবনা।
[]সঙ্কট মোকাবেলায় করনীয়:-
•রাস্ট্রীয় উদ্দোগে দূর্যোগপীড়িত মানুষের পাশে থাকার বাস্তবসম্মত কার্যক্রম ও সম্ভাব্য আশু সঙ্কট মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে জনগনকে আশ্বস্ত করন।
•অযথা পারস্পরিক দোষারূপ না করে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত, সামাজিক, বেসরকারী উদ্যোগেও দূর্যোগপীড়িত মানুষের পাশে এগিয়ে আসা
•ডোর টু ডোর ব্যাপক সচেতনতা মূলক প্রচারনা চালানো।
•সংক্রমনের বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক নির্দেশ অমান্যকারীদের উপর প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রন।
ডা:মাহফুজ আহমেদ রনক
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট হাসপাতাল।
ঢাকা,বাংলাদেশ।
২৫-০৩-২০২০