শাহিন আহমদ,সিলেট জেলা প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার সংখ্যালঘু নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরীর মদদ ও উস্কানির প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি।

এর আগে গত ১৭ মার্চ ফেসবুকে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে দেয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮টি হিন্দুবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় থানায় পৃথক দুইটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় প্রধান আসামিসহ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তর করা হয়।

এদিকে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে শাহিনুর পাশা চৌধুরীর যোগাযোগ ছিল বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্র জানায়, সম্প্রতি সারাদেশে ঘটে যাওয়া হেফাজতে ইসলামের সহিংস আন্দোলনে সরাসরি নির্দেশ দাতাদের মধ্যে অন্যতম শাহিনুর পাশা। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানসহ সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে দেশের অভ্যন্তরে অপতৎপরতা চালিয়ে থাকেন তিনি। এছাড়া তারেক রহমানসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন পক্ষের নির্দেশে দেশে অরাজকতা ও নাশকতামূলক আন্দোলন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন এই হেফাজত নেতা।

আরও জানা যায়, সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংখ্যালঘু গ্রামে ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় তার মদদ ও উস্কানির প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। এছাড়া হেফাজতসহ বিভিন্ন সরকারবিরোধী গোষ্ঠীকে আইনি সহায়তা দিয়ে তাদের আবারও সহিংস আন্দোলনের জন্য মাঠে নামানোরও কাজ করে যেতেন হেফাজতের এই নেতা।

এ বিষয়ে সিআইডির সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান বলেন, বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিআইডির একটি টিম সিলেট থেকে শাহিনুর পাশাকে গ্রেপ্তার করেছে। সম্প্রতি হেফাজতের সহিংস আন্দোলনের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরে অপতৎপরতাসহ সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত আছেন বলে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগকে সিআইডি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছে।

এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্প্রতি সহিংসতার একটি মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (৭ মে) বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা বেগম।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। এসব ঘটনায় ৫৫টি মামলা করা হয়েছে। হেফাজত নেতা শাহিনুর পাশাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা ভূমি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গত ১ এপ্রিল ভূমি অফিসের অফিস সহকারী এ. বি. সিদ্দিক সদর মডেল থানায় এ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরীর নুরানী -৫১/১৩, বনকলাপাড়া এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী জমিয়তের উলামায়ে ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।