রাকিব শান্ত, উত্তরবঙ্গ ব্যুরো প্রধানঃ হঠাৎ করেই ভাঙ্গলের কবলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি
গতকাল মধ্যরাতে হালকা ভাবে শুরু হলেও আজ দুপুর থেকে তীব্র আকার ধারণ করেছে বগুড়ার সারিয়াকান্দির নদী ভাঙ্গন। আচমকা এই ভাঙ্গন শুরু হবার ফলে নদীপাড় এলাকার লোকজন তাদের কোনও জিনিসপত্র সরানোর সুযোগ পায়নি।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার কামালপুর নামক স্থানে ভাঙ্গনের সূত্রপাতটি হয়েছে। এই মুহূর্তে সেখানে লোকজন সেখানে দিকবিদিকভাবে ছোটাছুটি শুরু করেছে। সকলেই চেষ্টা করছে যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব তাদের জিনিসপত্র নদীর সর্বনাশা ভাঙ্গনের গ্রাস থেকে বাঁচানোর।
ঘটনা স্থলে উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় এখন পর্যন্ত প্রায় একশোর বেশি ঘর বাড়ি নদীর কবলে বিলীন হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি তাদের গৃহপালিত নদীর গর্ভে চলে গেছে। ভুক্তভোগী একজন কান্না জড়িত কন্ঠে জানান নদীগর্ভে চলে যাওয়া প্রায় এক কিলোমিটার জায়গায় তাদের সমস্ত ঘরবাড়ি নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে কিন্তু কেউ সাহায্য করতে আসে নাই।
ঘরবাড়ি হারিয়ে কামালপুর গ্রামের মানুষজন এখন শুধু নদীর দিকে তাকিয়ে আহাজারি করছে। সরজমিনে দেখা যায় তারা শুধুমাত্র কিছু ছোট ছোট ব্যবহার জিনিসপত্র রক্ষা করতে পারলেও বড় কোন স্থাপনা তারা রক্ষা করতে পারেনি । এই সুযোগে কিছু কিছু লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এদিকে খবর পেয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক জনাব সাইফুল ইসলাম সকালেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি জানান, গতকাল রাত আনুমানিক ৯টার সময় বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসানপাড়া স্পার-২ বাঁধ(প্রায় ২০ মি.) নদীর স্রোতের তীব্রতায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সারিয়াকান্দি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক বগুড়াকে অবহিত করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে উক্ত বাঁধ রক্ষার্থে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। অদ্য স্বয়ং সেটি পরিদর্শন করে কোন অবস্থাতেই যাতে বাঁধ ভেঙ্গে সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া ও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় প্রায় ৫০০ পরিবারকে রক্ষা করা গিয়েছে।
তবে এই তৎপরতায় আপাতত ভাঙ্গন রোধ করা গেলেও উপজেলা হাটশেরপুর ইউনিয়নসহ অন্যান্য ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী সকলকে সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, মুজিব কেল্লাসহ অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার(যদি থাকে) তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং সরকারের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রীও মজুদ আছে।