ওয়েব ডেস্ক: মায়ের জানাজায় অংশ নিতে পারেননি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম। তিনি ছাড়াও তার ৫ ভাই আবদুল্লাহ হাসান, ওসমান গনি, আবদুস সামাদ, রাশেদুল আলম ও শহিদুল আলম কেউ জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি। এছাড়া মোরশেদুল আলম নামে তার এক ভাই ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
রোববার (২০ অক্টোবর) আছর নামাজের পর চট্টগ্রামের পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাইফুল আলমের মা চেমন আরা বেগমের (৯২) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তপটিয়া পৌরসভার এস আলম জামে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে রোববার (২০ অক্টোবর) ভোরে বার্ধক্যজনিত রোগে রাজধানী বনানীর বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বেগম মোজাহেরুল আনোয়ার। পরে হেলিকপ্টারে করে তার মরদেহ চট্টগ্রামের পটিয়ায় নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে থেকে সাইফুল আলম মাসুদসহ তার অন্য ভাইয়েরা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপের ব্যাংক খাতে একের পর এক লুটপাটের চিত্র সামনে আসে। এ কারণে দেশে ফেরার সাহস করেননি সাইফুল আলম মাসুদসহ তার অন্য ভাইয়েরা। সবশেষ রোববার মায়ের জানাজায়ও উপস্থিত হতে পারেননি কেউ। ভিডিও কলে শেষবারের মতো মাকে দেখেন সন্তানরা।
জানাজায় উপস্থিত বেশিরভাগের মুখে ছিল এ কথা। কত ধন-সম্পত্তি এবং কত প্রভাব প্রতিপত্তি। কিন্তু তারপরও মায়ের জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি দেশের অন্যতম শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদ এবং তার ভাইয়েরা। এটি দেখে দুর্নীতি এবং লুটপাটকারীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে।
একটি বেসরকারি টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘কি কাজে এলো এত টাকা, ধন-সম্পদ। মৃত মায়ের মুখটা শেষবারের মতো দেখতে পারলেন না।’
গণঅভ্যুত্থানে বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে সরকারের প্রশ্রয়ে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ব্যাংকিং খাতে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এক ব্যক্তিতে পরিণত হন। খোদ ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগসাজশ ও সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে ব্যবহার করে ব্যাংক দখল, একাধিক ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়া, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এমনকি প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দেশের সর্ববৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের দায় মেটানো হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।