এমন ভুক্তভোগীদের একজন ইমাম এ (ছদ্মনাম)৷ পশ্চিম জার্মানির এক ছোট্ট শহরে অবস্থিত তার মসজিদে রঙ দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছিলো৷ তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে মসজিদের দেয়ালে ও জানালায় রংয়ের স্প্রে করে স্বস্তিকা চিহ্ন এঁকে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা৷’’ তার দাবি গত কয়েক বছরে এমন হামলার ঘটানা মারাত্মকভাবে বেড়েছে৷
জার্মানিতে মুসলিম ও ইহুদি বিদ্বেষ নিত্য ঘটনা হয়ে উঠেছে৷ কেবল ২০২০ সালে ১২শ’ ২৬টি ইসলামবিরোধী হামলার কথা জানায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ তবে প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা এর চেয়েও বেশি বলে সন্দেহ মন্ত্রণালয়ের৷
কাউন্সিল অব ইউরোপের ইহুদি ও মুসলিমবিদ্বেষ বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ডানিয়েল হ্যোলটগেন বলেন, এসব ঘটনা আসলে জার্মানির প্রকৃত চিত্র নয়৷ হ্যোলটগেন ইউরোপের আটটি দেশের মুসলিমদের সংগঠনের বিভিন্ন অভিযোগ বিষয়ে কাজ করছেন৷ তিনি জানান, চিত্রটি যদিও সামগ্রিক নয় তবে চলমান পরিস্থিতি বোঝার জন্য তা প্রয়োজনীয় গবেষণার ভিত্তি হতে পারে৷
বিভিন্ন সময়ে এমন পরিস্থিতির শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানো এবং হুমকি প্রদানের বিষয়টিও রাস্তায় লাঞ্ছনা ও মৌখিক আক্রমণের শিকারের মতো হয়ে উঠেছে৷তবে এমন ঘটনার পরিণতিও খুব একটা ভাল নয় বলে জানালেন ইমাম এ৷ তিনি বলেন তার মসজিদে স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকার পরের শুক্রবারের নামাজে মাত্র দশজন লোক অংশহগ্রহণ করেছে৷ সাধারণত শুক্রবারের নামাজে একশজন মসজিদটিতে জমায়েত হতো৷
তার মতে, এমন ঘটনার পর তরুণ মুসলমানরা ভয় পেয়ে দূরে থাকতে চেয়েছে৷ আর এ ঘটনায় তদন্ত হলেও তেমন কিছু বেরিয়ে আসেনি৷ মসজিদটি পরে সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি করা যায় এমন জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়৷
হুমকি প্রদান বিষয়ে ইমাম বলেন, তিনি প্রায়ই এমন ম্যাসেজ পান যেখানে বলা হয়, ‘‘দেশে ফিরে যাও৷ অথবা এখানে তোমার জায়গা নেই৷’’
জার্মানির কাউন্সিল অব মুসলিমস-এর চেয়ারম্যান আইমান মাইজেক বলেন অনলাইনে এমন ঘৃণা ছড়ানোর বিষয়টি নতুন৷ আর এমন ঘটনা মারাত্মভাবে বাড়ছে৷এদিকে ২০২০ সালে জার্মানির বিভিন্ন এলাকায় মসজিদে হামলার ১৫০টি ঘটনা ঘটেছে৷
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপিয়ান কমিশন ফর রেসিজম অ্যান্ড ইনটলারেন্স আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইহুদি ও মুসলমান বিদ্বেষ ঠেকাতে একটি সুপারিশমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে৷ এ সুপারিশমালা রাজনীতিবিদদের কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে৷
সুত্র :ইনফোমাইগ্রেন্টস