স্পোর্টস ডেস্ক: জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, একদিন দিনের শুরুতে আমরা আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে ছিলাম। এ সময় নগ্নপদ, খালি মাথা, চামড়ার বস্ত্র পরিহিত ও তরবারি গলায় ঝোলানো এক দল লোক তার কাছে এলো। তাদের অধিকাংশ বা সবাই ’মুযার’ গোত্রের লোক ছিল। তাদের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের ছাপ দেখে আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি ঘরের ভেতরে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে বেলালকে (রা.) নির্দেশ দিলে বেলাল (রা.) আজান ও ইকামত দিলেন।
নামাজের পর নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন এবং তিলাওয়াত করলেন,
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اتَّقُوۡا رَبَّکُمُ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ وَّ خَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَ بَثَّ مِنۡهُمَا رِجَالًا کَثِیۡرًا وَّ نِسَآءً وَ اتَّقُوا اللّٰهَ الَّذِیۡ تَسَآءَلُوۡنَ بِهٖ وَ الۡاَرۡحَامَ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَلَیۡکُمۡ رَقِیۡبًا
হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন। (সুরা নিসা: ১)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ لۡتَنۡظُرۡ نَفۡسٌ مَّا قَدَّمَتۡ لِغَدٍ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর; আর প্রত্যেকের উচিত চিন্তা করে দেখা সে আগামীকালের জন্য কি প্রেরণ করেছে; তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। (সুরা হাশর: ১৮)।
তারপর রাসুল (সা.) বললেন, আপনারা দিনার, দিরহাম, বস্ত্র, গম ও খেজুর যা পারেন দান করুন, এক টুকরো খেজুর দিয়ে হলেও সাহায্য করুন।
তখন এক আনসারি সাহাবি একটি থলে নিয়ে এলেন। থলেটি এত ভারি ছিল যে তার তুলতে কষ্ট হচ্ছিল। তিনি ধরে রাখতে পারছিলেন না। তারপর সবাই একের পর এক সদকা নিয়ে আসতে লাগল। অবশেষে আমি খাদ্য ও বস্ত্রের দুটি স্তুপ দেখতে পেলাম। দেখলাম, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চেহারা এক টুকরো স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তিনি বললেন, যে ব্যাক্তি ইসলামে কোন নেক কাজের প্রচলন করবে, সে তার নেক কাজের সাওয়াব পাবে এবং যারা তার পরে ওই নেক কাজ করবে, তাদের সমান সওয়াব পাবে। পরবর্তী আমলকারীদের সওয়াবও তাতে কমবে না। আর যে কোনো খারাপ কাজের প্রচলন করবে, তার অসৎ কাজের গুনাহ তার ওপর বর্তাবে এবং পরবর্তীতে যারা অসৎ কাজটি করবে তাদের গুনাহও তার ওপর বর্তাবে। পরবর্তীদের গুনাহ তাতে কমবে না।
সূত্র: সহিহ মুসলিম