মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার আশ্রয় শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকারের রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া যেন তাদের স্বেচ্ছাতেই হয়। জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘ জ্ঞাত, যথাযথ ও হালনাগাদ তথ্যসমৃদ্ধ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে তাদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারের পক্ষে অটল রয়েছে।
জাতিসংঘ যেসব রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে চায় তাদের মৌলিক অধিকার ও দ্বীপটিতে সেবাসমূহ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করছে। অধিকারগুলোর মধ্যে মূল ভূখণ্ডে স্বাধীনভাবে যাওয়া-আসার অধিকারের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও জীবিকার সুযোগ অন্তর্ভুক্ত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার ভাসানচর প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে জাতিসংঘ সরকারের সাথে এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা, প্রক্রিয়া ও কর্মপরিকল্পনার মতো ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে চায়।
জাতিসংঘ কক্সবাজারে আশ্রয়রত প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য একটি কার্যকর ও মানবিক কর্মসূচিতে সরকারকে সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ওপর জোর দিচ্ছে। এর পাশাপাশি জাতিসংঘ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছাভিত্তিক, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনসহ এই সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও আশ্রয় প্রদানের জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের মানবিক মূল্যবোধ ও উদারতার প্রশংসা করছে। আর এই হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা ও আরও অনেককে সহায়তা দেয়ার মানবিক এই কাজে জাতিসংঘ অংশীদার হওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে।
সরকারি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার চলতি মাসেই কক্সবাজার থেকে বঙ্গপোসাগরের ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচ স্থানান্তর করতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ নিজভূমি থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলা আশ্রয় দিয়েছে। এদের অধিকাংশই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কঠোর দমন-পীড়ন শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে প্রতিবেশী এই দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছে।