ক্রীড়া ডেস্ক: এটা ২০২০ সাল, বড় এক ক্রান্তিকাল পার করছে বিশ্ব। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়িয়ে বেঁচে থাকাটাই এখন মুখ্য। এমন সময়েও ক্রিকেটপাগল ভারতীয়রা মহেন্দ্র সিং ধোনির অবসর সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে জল্পনা-কল্পনার ইতি টানতে পারছে না! তাহলে একবার ভেবে দেখুন, ২০১১ সালের পর তাদের প্রিয় সন্তান শচিন রমেশ টেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরি দেখার আশায় কতটা উদগ্রীব ছিলেন ভারতীয়রা!
যে শচিনকে ভারতীয়রা ঈশ্বরের আসনে বসিয়েছিলেন, সেই শচিন ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯৯তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর যতবার ২২ গজে ব্যাট হাতে নেমেছেন, টিভির পর্দায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন সমর্থকরা। থেকেছেন মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়। ঈশ্বরের ব্যাটে শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায়। কিন্তু অপেক্ষাটা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছিল। পরের ৩৩টি ইনিংসে অপেক্ষাটা ঘোচেনি। শচিন তখন খুব বাজে ফর্মে ছিলেন, বিষয়টা তেমনও নয়। ২০১২ সালে ঢাকায় স্বপ্নপূরণ হওয়ার আগে ৮৫, ৯৪ আর ৯১ রানের ইনিংসও দেখা গেছে তার ব্যাটে।
২০১১ সালে ইংল্যান্ড সফরে ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনে ভারতের দ্¦িতীয় ইনিংসে ৯১ রান করেছিলেন শচিন। সেদিন সবকিছুই ছিল শচিনের অনুকূলে, নিশ্চিত সেঞ্চুরির দিকেই এগুচ্ছিলেন ব্যাটিং জিনিয়াস। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন টিম ব্রেসনান। ইংলিশ পেসারের একটি ইনসুইঙ্গার শচিনের প্যাডে আঘাত হানতেই আউটের আবেদন ইংলিশদের। অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ার রড টাকারও সাড়া দেন ওই আবেদনে। বলটা ছিল লেগস্টাম্পের ওপর। আউট না দিলেও পারতেন টাকার। এতেই তেতে ওঠেন ভারতীয়রা।
নিজেদের রাগ মেটানোর জন্য আম্পায়ার টাকার আর বোলার ব্রেসনানকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এতদিন পর সেই স্মৃতি স্মরণ করেছেন ব্রেসনান। ইংলিশ পেসার জানিয়েছেন, কাউকে আউট করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি পেতে হবে, এমনটা কখনও কল্পনাও করেননি। করেনি আম্পায়ার টাকারও। ৩৫ বছর বয়সি ব্রেসনান বলেছেন, আমি এবং আম্পায়ার, দুজনই প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছি। সেই ঘটনার অনেকদিন পর পর্যন্ত আমরা এই হুমকি পেতাম। আমি টুইটারে পেতাম এসব হুমকি আর আম্পায়ারকে তার বাসার ঠিকানায় নানানভাবে ভয় দেখানো হতো।
ভয়ে পুলিশি সহায়তাও নিতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ারকে। এমনটা জানিয়ে ব্রেসনান বলেছেন, আম্পায়ারকে বলা হতোÑ তুমি এটা আউট দিলে কীভাবে? বলটা লেগস্টাম্পে লাগত না। সেই ম্যাচের কয়েক মাস পর তার (রড টাকার) সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলছিলেনÑ দেখো আমি এখন নিরাপত্তাকর্মী সঙ্গে নিয়ে চলি। ওনার বাসার আশপাশের পুলিশি পাহারা থাকত।
সেই ম্যাচ আর শচিনের সেই আউটের কথা স্মরণ করে ব্রেসনান বলেছেন, তখন তার (শচিন) ৯৯টি সেঞ্চুরি। সেই সিরিজে বিসিসিআইয়ের কারণে রিভিউ রাখা হয়নি। টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল, ওভালে। বলটা হয়তো লেগস্টাম্পের বাইরে দিয়েই যেত। তবে আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। সে (শচিন) হয়তো নিশ্চিতভাবেই সেঞ্চুরি পেতে পারত। তবে আমরা সিরিজ জিতে বিশ্বের এক নম্বর দল হয়ে যাই।