আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হবেন, সেসব কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের সভাপতিত্বে বুধবার (২৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন।
কমিশন সভা শেষে বিএসইসির মুখপাত্র জানান, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ব্যর্থ হবেন, ওই কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে কমিশন সভায় কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, কোম্পানির বিদ্যমান উদ্যোক্তা পরিচালক এবং প্রস্তাবিত পরিচালকদের সাব রুল (২) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের রুল ৪ (প্রভিশন অব ইনসাইডার ট্রেডিং), ১৯৯৫ মতে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
আইনের এই ধারা অনুযায়ী, গত জুলাইয়ে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ৬০ কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দেয় বিএসইসি। এই ৬০ কার্যদিবসের গণনা শুরু হয় গত ২৯ জুলাই থেকে। আর ৬০ কার্যদিবস শেষ হয় গত ২৭ অক্টোবর। তবে এ সময় শেষ হওয়ার আগেই কয়েকটি কোম্পানি সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে এক মাস সময় বাড়ানো হয়, যা শেষ হবে ৩০ নভেম্বর।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বরে দুই শতাংশের কম শেয়ার ধারণ করায় ৯ কোম্পানির ১৭ পরিচালকের পদ শূন্য ঘোষণা করে বিএসইসি। শূন্য ঘোষণা করা ১৭ পরিচালকের পদ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্টে কোম্পানিকে পূরণ করতে বলা হয়। ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন শেয়ারহোল্ডারদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
পরিচালক পদ হারানোর মধ্যে সবেচেয়ে বেশি রয়েছে মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির পাঁচজন পরিচালক পদ হারিয়েছেন। তারা হলেন- আজিজ মাহমুদ ইরশাদ উল্লাহ, ফাতেমা ইসলাম সোনীয়া, আজাদ মোস্তফা, শফিকুর আহমেদ ও সাদ কাদির বিন সোলাইমান।
ইটকেট লিমিটেড থেকে পদ হারিয়েছেন তিনজন পরিচালক। তারা হলেন- এটিএম মাহবুবুল আলম, সাদিকা মাহাবুব ও মো. আনিসুজ্জামান। দুজন পরিচালক পদ হারিয়েছেন প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স থেকে। তারা হলেন- বদলুর রহমান খান ও হাবিব-ই আলম চৌধুরী। মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকেও দুজন পরিচালক পদ হারিয়েছেন। এই দুই পরিচালক হলেন- শামিমা নাসরিন ও দিলরুবা শারমিন।
এছাড়া বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের হোসেল হুমায়ন, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের পাবলিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পাইওনিয়ার ড্রেসেস, ইমাম বাটনের লোকমান চৌধুরী, পূরবী জেনারেলের মো. ইকবাল এবং ইউনাইটেড এয়ারের শাহিনুর আলম পরিচালক পদ হারিয়েছেন। এই পরিচালকদের গত ২ জুলাই ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে আল্টিমেটাম দিয়েছিল বিএসইসি। কমিশনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের পথ শূন্য ঘোষণা করা হয়।