ভারতের মহারাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সংক্রমণের বর্তমান হার না কমলে লকডাউন ঘোষণা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধভ ঠাকরে। খবর- বিবিসি।
তিনি বলেন, জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না এবং এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ‘অপ্রতুল’ হয়ে উঠতে পারে।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) প্রদেশটিতে ৪৭ হাজার ৮২৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একইদিনে ভারতজুড়ে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৪৬৬ জনের শরীরে এবং মারা গেছেন ৪৬৯ জন। যা গত ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে বলেন, ‘এই অবস্থা চলতে থাকলে আমি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন নেয়ার পরেও কিছু মানুষ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন কারণ তারা মাস্ক পরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।’
স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণের অনীহার কথা তুলে ধরে গত রোববারও ঠাকরে রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লকডাউনের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন।
তবে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সরকারের মধ্যেও কেউ কেউ বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নেননি।
তবে ইতোমধ্যে পুনে শহরে কারফিউ জারি করে সব ধরনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হোটেল, বার, শপিং মল এবং সিনেমা হল এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পিসিআর এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন উভয় ধরনের পরীক্ষার ফি কমানো হয়েছে।
ভারতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ২২ লাখেরও বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার জনের। সংক্রমণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের পরেই দেশটির অবস্থান।
ভারতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও মার্চে এসে আবার তা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে।
সংক্রমণ কমাতে দেশটি গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে তারা। জুলাইয়ের মধ্যে ২৫ কোটি মানুষকে টিকা সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে সংক্রমণ কমাতে এ কর্মসূচি আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ অবশ্য সাম্প্রতিক এই উচ্চ সংক্রমণ হারের জন্য করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দায়ী বলে মত দিলেও সরকার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে।
দেশটিতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পেছনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণের অনীহা এবং একেক সময়ে সরকারের একেক ধরনের বক্তব্যকে দায়ী করেছেন কেউ কেউ।