আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লকডাউনের মধ্যে গার্ডেন পার্টি ও মদের আয়োজনের জেরে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার ৫ সহকারীর পদত্যাগে বিচলিত হননি, বরং বিদায়ী সহকর্মীদের শুভকামনা জানিয়েছেন।
বিবিসিকে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘পদত্যাগের আগ পর্যন্ত তারা সরকারের অংশ ছিলেন। এতদিন সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
তবে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্যরাও এই ৫ জনকে অনুসরণ করুক- তা এই মুহূর্তে একদমই চাইছেন না ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। শনিবার বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র।
দেড় বছর আগে, ২০২০ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে যখন করোনার প্রথম ঢেউ চলছে, সে সময় বেশ কয়েকজন অতিথির জন্য লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে নিজের সরকারি বাসভবন পার্টির আয়োজন করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যের প্রথম লকডাউনের মধ্যে আয়োজিত সেই পার্টিতে শতাধিক অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন এবং সবাইকে যার যার মদ আনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
পার্টিতে অতিথিদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইমেইলের মাধ্যমে। সেই ইমেইলটি সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে এবং তা থেকে জানা গেছে ২০২০ সালের ২০ মে আয়োজন করা হয়েছিল সেই গার্ডেন পার্টির।
ওই সময় লকডাউন চলছিল যুক্তরাজ্যে। এ কারণে যে কোনো প্রকার সমাবেশ ও জনসমাগম ওই সময় কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল দেশটিতে।
এদিকে, নিমন্ত্রণের ইমেইল ফাঁস হওয়ার পর থেকে ব্যাপক চাপে আছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দল লেবার পার্টি ইতোমধ্যে জোরেশোরে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির অনেক আইনপ্রণেতা এখনও মৌখিকভাবে কিছু না বললেও এই ঘটনায় খুবই ক্ষিপ্ত আছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদামাধ্যমগুলো।
ইতোমধ্যে এই ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে যুক্তরাজ্যের মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন বরিস জনসনের ৪ জ্যেষ্ঠ সহকারী। এরা হলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পলিসি বিভাগের প্রধান মুনিরা মির্জা, কমিউনিকেশন্স বিভাগের পরিচালক জ্যাক ডয়েল প্রধান ব্যক্তিগত সচিব মার্টিন রেনল্ডস ও চিফ অব স্টাফ ড্যান রোসেনফিল্ড।
তারপর শুক্রবার পদত্যাগ করেন জনসনের আরেক জ্যেষ্ঠ সহকারী ও শিক্ষানীতি বিশেষজ্ঞ এলিনা নারোজনস্কি।
বর্তমান পরিস্থিতে বিরোধী দলের এমপিদের দাবি মেনে ও সরকারি দলের এমপিদের প্রতি সম্মান রেখে বরিস জনসন পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন কিনা- জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওই মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তেও ওপর নির্ভর করছে।’