প্রত্যয় নিউজডেস্ক: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ-লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলালদের সহযোগী পুলিশের অপর চার সদস্য স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন। দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে র্যাবের একটি দল তাদের কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করেছে।
আদালতের খাস কামরায় দুপুর থেকে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ চার আসামি হলেন, পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
র্যাব-১৫ কক্সবাজারের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সিনহা হত্যা মামলার আসামি পুলিশের চার সদস্যকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ২৪ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আদালতের আদেশ পেয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের এই চার সদস্যকে দ্বিতীয়দফা রিমান্ডের নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে র্যাব। আজ বুধবার চার দিনের রিমান্ড শেষে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় আদালতে আনা হয়েছে।
এর আগে উক্ত মামলায় বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে প্রদীপকে চার দফায় ১৫ দিন এবং লিয়াকত ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে তিন দফায় ১৪ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়। লিয়াকত ও নন্দ দুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও প্রদীপ রাজি হননি। তারা সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন। এপিবিএন’র ৩ সদস্যসহ এ পর্যন্ত আটজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ চারজনের জবানবন্দি সম্পন্ন হলে এ মামলায় ১২ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পাবেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি মারিশবুনিয়ার একটি পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফেরার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার আসামি ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়। সিনহা হত্যার পর পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন এপিবিএন সদস্যকে গ্রেফতার করে এলিট ফোর্সটি। এনিয়ে মোট ১৩ আসামি কারান্তরীণ।