নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড নিরাময় কেন্দ্রে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম হত্যা মামলায় ১৫ আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির দুই পরিচালকসহ ১২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এরমধ্যে সর্বশেষ গেল বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) ধানমণ্ডির নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় নারী পরিচালক ফাতেমা আক্তার ময়নাকে। এর আগে ১০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম পরিচালক ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ খানকে (নিয়াজ মোর্শেদ) গ্রেফতার করা হয়। তার আগে প্রতিষ্ঠানটির ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যাদের ১০ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আর গ্রেফতার হওয়া দুই পরিচালককেও রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৯ নভেম্বর মানসিক সমস্যার কারণে এএসপি আনিসুল করিমকে মাইন্ড এইডে আনা হয়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে হত্যার অভিযোগ করা হয়। আনিসুল করিম মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দীন আহম্মেদ বাদী হয়ে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
আনিসুল করিম মৃত্যুর পর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, মাইন্ড এইডে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ছয়-সাতজন টেনে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরা হয়। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করেন। আসামিরা কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমকে চেপে ধরে তার হাত বাঁধেন। কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন আনিসুল করিম। এরপর তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নিস্তেজ হয়ে পড়া এএসপি আনিসুল করিমকে দেখতে আসেন অ্যাপ্রোন পরা এক নারী। তিনি এসে আনিসুলকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন। পরে সেখানে আরও একজন অ্যাপ্রোন পরা তরুণী আসেন। এ সময় ভেতরে প্রথম আসা ওই অ্যাপ্রোন পরা নারী আনিসুলের বুকে হাত দিয়ে চাপতে থাকেন এবং পরীক্ষা করতে থাকেন। এতে আনিসুল কোনো সাড়া না দিলে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ দেখে কার কী ভূমিকা ছিল তার সঙ্গে মিলিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আসামিরা এলোমেলো তথ্য দিয়ে একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, সেদিন আনিসুল করিম নিথর হয়ে পড়লে তাকে অ্যাপ্রোন পরা এক নারী পরীক্ষা করতে দেখা গেছে সিসিটিভি ফুটেজে। ওই নারীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।