নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামীকাল হোসেনী দালান থেকে সড়কে বের হবে না শিয়াদের ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকেও তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করার জন্য বলা হয়েছে।
তবে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের হোসেনী দালান চত্বরেই তাজিয়া মিছিল হবে জানিয়েছে এর সাথে সংশ্লিষ্ট। সকাল ১০টায় এই মিছিল শুরু হবে। একই সঙ্গে আশুরার অন্যান্য কার্যক্রমও অন্য সময়ের মতো হবে বলে জানিয়েছেন হোসেনী দালান ইমামবাড়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। গত ২৩ আগস্ট আশুরা উদযাপন উপলক্ষে ডিএমপি সদরদফতরে ঢাকা মহানগরের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা শেষে ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করার বিষয়ে সবাই উদ্যোগ নেবেন।’
স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরোয়াভাবে ধর্মীয় অন্যান্য অনুষ্ঠান পালন করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ঘরোয়া আয়োজনেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ইমামবাড়াগুলোতে সবাইকে একসঙ্গে না ঢুকিয়ে খণ্ড খণ্ড দলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবস্থানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
শনিবার বিকেলে হোসেনী দালান ইমামবাড়ার তত্ত্বাবধায়ক এম এম ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘আশুরার দিন যে প্রোগ্রাম বাইরে হয় অর্থাৎ মিছিল, সেটি ভেতরেই হবে। মিছিল আমরা ভেতরে করব সকাল ১০টায়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যতটুকু সম্ভব এর মধ্যেই আমরা সবকিছুই করব। এটা ধর্মীয় আকিদার বিষয়। আমরা কাউকে আসতে নিরুৎসাহিতও করছি না, আবার কাউকে আসতেও বলছি না। আমরা আমাদের ব্যবস্থা রাখছি। ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘এটা (তাজিয়া মিছিল) আমাদের ৪০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। এর আগে মিছিল বন্ধ ছিল বলে আমার জানা নেই। কারফিউ ছিল, বড় বড় ঝড়-তুফান হয়েছে, কখনো আমাদের মিছিল বন্ধ ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সবার দিকে খেয়াল রেখে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার মিছিল রাস্তায় নামবে না।
তিনি বলেন, অন্যান্য সময়ের মতো আজ (আশুরার আগের রাতে) রাত দেড়টায় ভেতরে মিছিল হবে। বোমা বিস্ফোরণের আগে এটা রাত ২টায় বের হতো। সেখানে দুলদুল থাকবে, মাতম হবে। তাজিয়া কারবালার যুদ্ধে নিহত ইমাম হোসেনের (রা.) (হজরত মুহাম্মদের (স.) দৌহিত্র) সমাধির প্রতিকৃতি। মহররমের দশম দিন বা আশুরার দিন ইমাম হোসেনের (রা.) সমাধির প্রতিকৃতি নিয়ে শিয়াদের মিছিল করাই হচ্ছে তাজিয়া মিছিল। কারণ এ দিনই ইমাম হোসেন (রা.) এজিদ বাহিনীর হাতে কারবালায় শাহাদাতবরণ করেন।