প্রত্যয় ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারির চলমান সংকটের মধ্যেও প্রবাসী আয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত আছে। চলতি মাসের মাত্র ১৬ দিনেই ১৩৬ কোটি ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। কোরবানির ঈদের কারণে এ মাসের বাকি দিনগুলোতেও বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে একক মাস হিসেবে জুলাইতে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ১৫৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ছে। এ ছাড়া কোরবানির ঈদের কারণেও পরিবার-পরিজনের কাছে আগের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জুনে রেকর্ড ১৮৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩৯ শতাংশ এবং মে মাসের চেয়ে প্রায় ২২ শতাংশ বেশি ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাসে এর আগে কখনো এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি।
২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, প্রণোদনা দেওয়ার ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স বাড়তে থাকে এবং ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। তবে চীনের উহান প্রদেশ থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনার প্রভাবে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে রেমিট্যান্সের গতি নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। তবে রোজার ঈদের মাস মে থেকে আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে রেমিট্যান্স। সব মিলিয়ে সদ্যঃসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেশি।
এক অর্থবছরে এটিও বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। এর আগে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৬ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রমের রেকর্ড ছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছিলেন। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৯.৫৯ শতাংশ বেশি ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার।
উল্লেখ্য, রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এবারের বাজেটেও প্রণোদনা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর ফলে আগামী দিনে রেমিট্যান্সে আরো গতি ফেরার আশা করা হচ্ছে।