বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার সেউজগাড়ি রেল কলোনি (আমতলা মোড়) এলাকায় আরিফ হোসেন নামক এক লেদ শ্রমিকের উপরে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও মামলা রেকর্ড করেনি বগুড়া সদর থানা পুলিশ।
আহত আরিফ হোসেনের স্ত্রী মুন্নি বেগমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৮ মে) লেদ মিস্ত্রী আরিফ হোসেন দুপুর ১ ঘটিকায় খাবার গ্রহণের উদ্দেশ্যে তার বাড়ির দিকে যাবার পথে সেউজগাড়ি রেলকলোনী এলাকায় আ: বারীর বাসার সামনে পৌঁছা মাত্রই মূল আসামী নয়ন ওরফে লালা ও তার বাহিনীর সদস্যরা হাতে ধারালো হাসুয়া ও এসএস পাইপ নিয়ে আহত আরিফ কে ঘিরে ধরে তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করার চেষ্টা করে। আরিফ হোসেন তাদেরকে টাকা ও মোবাইল ফোন না দিলে তারা আরিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আরিফ দৌড়ে সেউজগাড়ী রেলকলোনীস্থ মোস্তফা এর বাড়ীর সামনে পৌছাইলে ছিনতাইকারীরা তার পিছু ধাওয়া করে তাকে ঘিরে ধরে এবং ০১নং হামলাকারী নয়ন ওরফে লালা তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে আহত আরিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দিলে উক্ত কোপ তার ডান হাত দিয়ে ঠেকাইলে ডান হাতের মধ্যমা ও রিং ফিংগার আঙ্গুল কেটে হাত হইতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার ডান হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসময়ে ০২নং হামলাকারী সাজু তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে আরিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দিলে উক্ত কোপ তার ডান ঘাড় হতে ডান পাজর বরাবর অনুমান ০৮ ইঞ্চি জায়গা কেটে গুরুত্বর জখম হয়। ০৩নং হামলাকারী বিপুল তার হাতে থাকা এসএস পাইপ দিয়ে আরিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারী ভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর জখম করে আরিফের পকেটে থাকা নগদ ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অসৎ উদ্দেশ্যে বাহির করে নেয়। অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা এসএস পাইপ দিয়ে আহত আরিফকে উপর্যুপরি আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর ও সাধারণ জখম করে। এসময় আরিফের ডাক চিৎকারে আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা যে কোন সময় আহত আরিফকে খুন জখমসহ আরো বড় ধরনের ক্ষতি করিবে বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকী দিয়ে চলে যায়। এরপর এলাকাবাসী দ্রুত আরিফকে শজিমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে। আহত আরিফ শজিমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় সেদিনই ৮ মে আহত আরিফের স্ত্রী মুন্নি বেগম হামলাকারী ১। মোঃ নয়ন ওরফে লালা (২১) পিতা-মোঃ নাছের, ২। মোঃ সাজু (৩৪) পিতা-মোঃ বক্কর, উভয়ের সাং-সেউজগাড়ী মন্ডলপাড়া (রেলকলোনী), ৩। মোঃ বিপুল (২১) পিতা-বাপ্পি, সাং-সূত্রাপুর (ফেলানী পট্টি), সকলের থানা ও জেলা-বগুড়াগনসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত আরিফ হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার পূর্ব পরিচিত। তারা মাঝেমধ্যেই তার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে জোর করে টাকাপয়সা দাবী করে। তিনি বরাবরই তাদেরকে ছিনতাইয়ের পথ থেকে সরে এসে তার সাথে অত্যাচার করতে নিষেধ করেন। এরই প্রেক্ষিতে তার উপরে এই প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। কিন্তু আজ ১১ই মে পর্যন্ত এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় মামলা এন্ট্রি হয়নি যার ফলে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ঘটনা আহত আরিফের পরিবার ও এলাকাবাসীর মনে ভয় ও হতাশা সৃষ্টি করছে।
এ ঘটনায় দায়িত্বরত স্টেডিয়াম ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তা দুলাল হোসেন জানান, তিনি প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। অতি দ্রুতই আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।