আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রিটেনে এই শীতে তিন-চতুর্থাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে নতুন একটি গবেষনা প্রকাশ করা হয়েছে। এই কারনে ২৫ শতাংশ সরকারী কর্মজীবি মানুষ তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না বলে মনে করছে সরকার।
নতুন বিশ্লেষণ অনুসারে, বর্তমনে যে ৭৫ শতাংশ লোক নতুন ঠান্ডা-সদৃশ লক্ষণগুলি অনুভব করছে তাদের লক্ষণগত কোভিড -১৯ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। আর এই গবেষনায় দেখা গিয়েছে শীতে তিন চতুর্থাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , গত সপ্তাহের তুলনায় আক্রান্ত ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দেখা যায যে ০ থেকে ৫৫ বছর বয়সীদের সংক্রমণ ধীরগতিতে দেখা গেলেও এটি ৫৫ থেকে ৭৫ বছর বয়সীদের সংক্রমক দ্রুতভাবে বাড়ছে। এটি উদ্বেগজনক কারণ বয়স্কদের হাসপাতালে চিকিৎসার ঝুকিঁ বেশি।
জেডওই কোভিড স্টাডি অ্যাপের বিজ্ঞানী ডাঃ ক্লেয়ার স্টিভস বলেছেন, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা এবং সর্দির মতো উপসর্গগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কোভিড লক্ষণগুলির সরকারী তালিকায় যুক্ত করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, দৈনিক নতুন উপসর্গযুক্ত কোভিড সংক্রমণ সংখ্যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি । হাসপাতালে ভর্তি হার গত বছরের তুলনায় সৌভাগ্যক্রমে অনেক কম । তবে লন্ডনে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি বেশি।
ব্রিটেনের চিকিৎসকরা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যের হাল নিয়ে একটি পরিসংখ্যান তৈরি করেছেন। প্রথমে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার ১২ জন ডেল্টা আক্রান্তের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। পরে পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ১৭৬ জন ওমিক্রন আক্রান্তের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়।
দেখা গেছে, ডেল্টা আক্রান্তদের মধ্যে যত জনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে, ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে সংখ্যাটা প্রায় তার তিন ভাগের এক ভাগ।
এর কারণ হিসাবে চিকিৎসকদের বক্তব্য, ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন দ্রুত ছড় ায় ঠিকই, কিন্তু ফুসফুসের ভেতরে এটি অপেক্ষাকৃত অনেক ধীরে বংশ বিস্তার করে। ফলে ফুসফুসের হাল ডেল্টা সংক্রমণে যতটা খারাপ হয়, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে ততটা খারাপ হচ্ছে না। ফলে ওমিক্রন আক্রান্তদের হাসপাতালে অপেক্ষাকৃত কম নিয়ে যেতে হচ্ছে।
ব্রিটেনে যে হারে ওমিক্রন সংক্রমণ বাড়ছে তাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এক চতুর্থাংশ কর্মী অনুপস্থিত থাকতে পারে বলে সর্তক করেছে সরকার। ব্রিটেনের ক্যাবিনেট অফিস জানিয়েছে, ওমিক্রনের জন্য পাবলিক সেক্টরের নেতাদের কর্মস্থলে ১০, ২০ কিংবা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী অনুপস্থিত থাকার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
ক্রিসমাস, বক্সিং ডে এবং নতুন বছরের উৎসবে ব্যাপকভাবে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। এর ফলে ব্রিটেনের পরিবহন, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মী এবং স্কুলগুলোতে স্টাফদের অনুপস্থিতি বেড়েছে। কারণ, এসব খাতের অনেক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে রয়েছে এবং কর্মস্থলে যেতে অক্ষম হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ ক্যাবিনেট অফিসের মিনিস্টার স্টিভ বার্কলে সম্প্রতি মিনিস্টারদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে ব্রিটেনে ওমিক্রন বিস্তার কিভাবে কর্মশক্তি ও সরবরাহ চেইনকে প্রভাবিত করতে পারে।