রাঙামাটি প্রতিনিধি: দীর্ঘ ৪ মাস ১২ দিন পর দেশের সবচেয়ে বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত (১ (সেপ্টেম্বর) থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে নামছেন জেলেরা। প্রায় সাড়ে চার মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ায় জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস।
মৎস্য বিভাগের হিসাবে, রাঙামাটির আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দুই উপজেলা মিলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। এসময় হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণ, স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ থাকে। হ্রদে নিষেধাজ্ঞা মানাতে নৌ-পুলিশের পাশাপাশি বিএফডিসির মনিটরিং দায়িত্ব পালন করে।
তবে চলতি বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ করা হয় মাছ আহরণ। কিন্তু পানিস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের বন্ধকালীন সময়ের পরও আরও ১ মাস ১২ দিন বর্ধিত করা হয়েছিল বন্ধের সময়সীমা। তবে শেষদিকে এসে কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি বেড়েছে উজানের ডল আর বৃষ্টিপাতে। এতে করে বিগত কয়েকবছরের মধ্যে এবছরই কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকা অবস্থায় মাছ আহরণ শুরু হচ্ছে।
এদিকে, জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার হ্রদে পানিস্বল্পতা না থাকায় মৌসুমের শুরুর দিকেই মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরণের সম্ভাবনা নেই। এতে করে বার্ষিক মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হতে পারে বলে মনে করছে বিএফডিসির কর্মকর্তারা।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানান, ‘দীর্ঘ ৪ মাস ১২ দিন পর কাপ্তাই হ্রদে আবারো মাছ আহরণ শুরু করে হতে যাচ্ছে। জেলে, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেই এবার মাছ আহরণ শুরুর দিন ধার্য করা হয়েছে। আমাদের বিএফডিসির নিজস্ব প্রস্তুতি হিসেবে পল্টুনসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে এবছর কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় আমরা আশাবাদী চলতি মৌসুমে হ্রদে মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।’