আবহাওয়া: ক্রমে বৃষ্টি কমে আগামীকাল শনিবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আগামী তিন-চারদিন পর দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে ফের বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।
লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এসময়ে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাত ৩০০ মিলিমিটার ছাড়িয়ে গেছে। এসময়ে সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহে। এছাড়া নেত্রকোনায় ৩৫১ এবং কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৩১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায়ও বৃষ্টি হয়েছে। এসময়ে ঢাকায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
এছাড়া অতিভারী বৃষ্টি হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে টাঙ্গাইলে ১৩০, ফরিদপুরে ১৩২, বগুড়ায় ১৩৪, যশোরে ১১৯ ও কুমারখালীতে ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
টানা বৃষ্টিতে দেশের অনেক অঞ্চলেই শহরগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ যেমন বেড়েছে, ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও।
গত দুদিনের মত শুক্রবারও সকাল থেকে ঢাকার আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। তবে বেলা ১১টার পর মেঘের আড়াল থেকে মাঝে মাঝে সূর্য উঁকি দিতে দেখা গেছে।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল ভোলায়। ওইদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়, ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে বজ্রমেঘ সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় শুক্রবারও চট্টগ্রাম, পায়রা, মোংলা ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
আগামী দুদিন বৃষ্টি ও তাপমাত্রা যেমন থাকবে-
আবহাওয়া অধিদপ্তর শনিবারের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আগামী রোববার সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। রোববার সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
পরবর্তী পাঁচদিনের আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, এ সময়ের শেষ দিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।