রাকিব শান্ত, উত্তরবঙ্গ ব্যুরো প্রধান: বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে মাদক মামলার আসামীদের অব্যাহতি দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতের কর্মচারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার ১৬ অক্টোবর সদর থানা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ সাজন, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেন।
জালিয়াতির এই ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বাদি হয়ে মামলা করেছেন। মামলা ৯ জনকে আসামী হয়েছে। অন্য ৪ চার আসামী অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদ, নিশিন্দারা এলাকার ওহেদুজ্জামান মাসুদ, নওগাঁর আয়েশা আক্তার শিমু ও মরিয়ম আক্তার নিপু।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদসহ পাঁচজন ২০২০ সালের একটি মাদক মামলার আসামি। চলতি বছরের ১৪ মে এই মামলার আসামিদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল। মামলার আরেক আসামি আয়েশা আক্তার শিমু জামিন নিয়ে পলাতক ছিলেন। তবে সেদিন আবু সাহেদ, মোক্তার হোসেন, ওয়াহেদুজ্জামান হাজিরা দেন। আর মরিয়ম আক্তার নিপুর পক্ষে তাদের আইনজীবী আদালতে সময় প্রার্থনা করেন। সাক্ষী না থাকায় বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা আসামিদের সময় প্রার্থনা মঞ্জুর করে আরেকটি দিন ধার্য করেন।
কিন্তু এই দিন ধার্যের আদেশের নথি আদালত থেকে গায়েব হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাঁচ মাস পর ১৪ অক্টোবর বিকেলে বেঞ্চ সহকারী আব্দুর রশিদ একটি নথি পান। এতে দেখা যায়, সাবেক পেশকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু সাহেদের পক্ষে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৪৯ ধারার বিধান মতে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিতের নথিতে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে।
বিষয়টি খোঁজখবর করে আদালত কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে সিজিএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুজ্জামান, জারীকারক এম এ মাসুদ, তার শ্যালক হারুন অর রশিদ সাজনের যোগসাজশে বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে।
জালিয়াতি মামলার বাদি মাকসুদুর রহমান বলেন, আব্দুল মান্নান আদালতের পেশকার ছিলেন। তার ছেলে আবু সাহেদ ২৬০ পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হন। সেই মামলার শুনানি ছিল। পেশকার হওয়ার সুবাদে তিনি আদালদের অন্য কর্মচারীদের হাত করে নথি জালিয়াতি করেন।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, সিজিএম আদালত থেকে বিচারকের স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতির ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়। পরে সোমবার আদালত থেকে তিন কর্মচারীকের আটক করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আব্দুল মান্নান ও মোক্তার হোসেনকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।