ভোলা প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন ২০২৩’ পাস হয়েছে। এর মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারীরা এখন থেকে নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন। গত ২ নভেম্বর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আইনটি পাসের জন্য জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি হোমিও চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব উল্লেখ করে কয়েকজন সংসদ সদস্য আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠ ভোটের মাধ্যমে আইনটি পাস হয়। এর আগে গত ২৩ অক্টোবর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের প্রস্তাব করেছিলেন। প্রসঙ্গত গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।
সংসদে পাসকৃত নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, অর্জিত চিকিৎসা শিক্ষাযোগ্যতা ছাড়া অন্য কোনো কোর্সের নাম, ডিগ্রি, সনদ, উপাধি, পদবি, বিবরণ বা প্রতীক ব্যবহার ও প্রচার অপরাধ হবে, সে কারণে তিনি (চিকিৎসক) অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আইনের বিধান লঙ্ঘন করে হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়াতে অন্তর্ভুক্ত নেই এমন কোনো ওষুধ চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে লিখলে বা বললে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান ‘দ্য বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক প্র্যাক্টিশনার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৩’ রহিতক্রমে নতুনভাবে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে বাংলায় ওই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনটি পাস হওয়ায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা, সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটবে।
স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা: দিলিপ কুমার রায় বলেন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কোনো স্থায়ী কাউন্সিল এবং আইন না থাকায় প্রায় নানা রকম জটিলতা তৈরি হয়ে আসছিল। আইনটি পাস হওয়ায় হোমিওপ্যাথিকে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা থেকে শুরু করে এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে আধুনিকতার ছোয়া লাগবে।
হোমিওপ্যাথিক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: শেখ আহসান হাবিব বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় এই চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক আধুনিক হবে। ফলে মানুষ ভালো চিকিৎসা পাবে। এ প্রসংগে ডা: গাজী মো. তাহেরুল আলম বলেন, বিশ্বের ৪০টিরও অধিক দেশে হোমিওপ্যাথি একটি জনপ্রিয় চিকিৎসা ব্যবস্থা। সরকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতীয় সংসদে এ আইনটি পাস করেছে। তাঁর মতে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আইনী পদক্ষেপের ফলে দেশের চিকিৎসা অংগনে হোমিওপ্যাথি সফলতার সাথে অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারবেন না মর্মে হাইকোর্ট নির্দেশনা দেন। এই আইন পাসের মাধ্যমে এখন নামের আগে চিকিৎসক পদবি ব্যবহারে বাধা দূর হলো।