শেখ সাখাওয়াত হোসেন, পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি:
বিদায় নিলেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান। ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দক্ষতার সঙ্গে তা পালনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। সে কারণে বিদায় বেলায় সাধারণ মানুষ এসে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর ইউএনওর কান্নায় হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান’র বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন চিত্র দেখা যায়।
ফুল ছিটিয়ে, বুকে জড়িয়ে ধরে কোনো স্বজনের বিদায়ে যেমন মানুষ পিছু পিছু অনেক দূর পর্যন্ত এসে বিদায় দেন, মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান’র বিদায়েও তেমনই করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলার অনেক বাসিন্দা।
আর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের এমন ভালোবাসায় মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান’র বিদায়ের সময় নিজেও কেঁদেছেন। বিদায়ের সেই ভিডিও ও ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুরছে। একাধিকজন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েও মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান’র বিদায়ে কেন কেঁদেছেন বা অন্যরা কেঁদেছেন, সে কথা লিখছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান খান’র বিদায়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সব পেশার মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। দিন রাত পরিশ্রম করে সবার ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হয়েছেনে তিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন উপজেলায় সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় ২০২২ ও ২০২৩ পরপর দুই বছর পাবনা জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের শিশুপার্কে নির্মাণ করেন উপজেলার প্রথম উন্মুক্ত লাইব্রেরী ‘নির্ঝরিণী’। যা উপজেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। উপজেলার ৯৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিদ্যালয় চত্বরে বাগাণ বিলাস বৃক্ষ রোপন, ফুটবল বিতরণ, আশ্রয়ন প্রকল্পের শতভাগ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তকরন, শহীদ মিনার সংস্থারসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রশংসিত হন।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, উপজেলায় যা করেছি নতুন কিছু করতে ভালো লাগে সে কারণে। বলা যায়, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাজগুলো করেছি। ভাঙ্গুড়ার প্রতিটি মানুষ ভালো থাকুক। আমার কর্মজীবনের সেরা সঞ্চয় আপনাদের ভালোবাসা। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই। উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের অনেক রকমের সহায়তা আমি পেয়েছি। ভাঙ্গুড়ার মানুষ খুব আন্তরিক। আমি কোনোদিন তাদের ভুলতে পারব না।