1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

জবিতে নজরুলের নাটক ‘শিল্পী’ মঞ্চস্থ

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১০২ Time View

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) মঞ্চস্থ হয়ে গেলো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাটক ‘শিল্পী’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউটিলিটি ভবনের ষষ্ঠ তলায় নাট্যকলা বিভাগের স্টুডিও থিয়েটার কক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটি মঞ্চায়িত করা হয়।

নাটকটির কোর্স তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন শামস্ শাহরিয়ার কবি। নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন বিথী রানী মন্ডল, আবীর হায়দার খান আকাশ, সায়লা আক্তার ও বৃষ্টি দেবনাথ। নাটকটিতে অভিনয়ে ছিলেন সৌরভ বিশ্বাস রুদ্র, অনন্যা সিংহ ও ফৌজিয়া পিংকী।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘শিল্পী’ নাটকটির কাহিনী গড়ে উঠেছে আত্মমগ্ন চিত্রশিল্পী সিরাজ তার স্ত্রী লাইলী ও প্রেমিকা চিত্রা কে ঘিরে সাধারণ ভাষায় ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী ‘শিল্পী’। অর্থাৎ চিত্রকর সিরাজ তার স্ত্রী লাইলী ও অপূর্ব মানসী চিত্রা- এ তিনটি চরিত্রকে কেন্দ্র করেই ঘটনা অগ্রসর হয়েছে।

নাটকটির প্রথম দৃশ্যে সিরাজ সবসময় তার শিল্পকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকে। চিত্রকর সিরাজ মূলত সৌন্দর্যের উপাসক। কিন্তু অন্যদিকে তার স্ত্রী শিল্পের পূজারী। সিরাজের স্ত্রী অসুস্থ লাইলীর মনে মানুষ সিরাজের আকাঙ্ক্ষা। চিত্রকর নয়, শিল্পী সিরাজ নয়, মানুষ অর্থাৎ স্বামী-রূপে সিরাজকে পাওয়ার তীব্র বাসনায় ব্রত শয্যাশায়ী লাইলী। সে স্বামীকে কাছে পেতে চায় রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে, কিন্তু সিরাজ বাস্তবে স্ত্রীকে চায়না। শিল্পী সিরাজ বাহু-বন্ধনে আবদ্ধ নারীকে ছুঁলেই প্রজাপতির পাখার রঙের মতো মিলিয়ে যেতে দেখে। শিল্পী সিরাজ এর মাঝে ভালোবাসা ও সৃষ্টির আনন্দ খুঁজে পায় না। সে জানায় তাকে সে তুলিতে অমর করে রাখবে। তার গৃহলক্ষী হবে নিখিল শিল্পীর বিশ্বলক্ষী। শিল্পী সিরাজ মনে করে প্রাপ্তির আনন্দের চাইতে বেদনার রঙে পুরানি তপস্যী হয়ে ওঠাই শ্রেয়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব। এমন সময় চিত্রা আসে। পরবর্তীতে শিল্পী সিরাজ জাগতিক সংসারের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে চায়। সে ছুটে অপূর্ব মানসী শিল্পীর ভক্ত প্রেমিকা চিত্রার কাছে।

দ্বিতীয় দৃশ্যে দেখা যায়, লাইলী যখন অভিমান করে তাকে ছেড়ে দূরে চলে যায় স্বীয় পিত্রালয়ে তখনই সিরাজ আবার আকৃষ্ট হয় তার প্রতি। সিরাজ ব্যাকুল হয়ে চলে যায় লাইলীর কাছে এবং ফেরার সময় লাইলী তার আঁকা স্বামী সিরাজের একটি চিত্র তাকে উপহার দেয়। শিল্পী সিরাজ তার হৃদ-কোমলে নতুনভাবে লাইলীকে আবিষ্কার করে তৃপ্ত হয়। শিল্পী সিরাজ সব সময় নিত্য-নতুন সুন্দরের পূজারী। সিরাজ আবার স্ত্রীকে ছেড়ে চলে যায়।

তৃতীয় দৃশ্যে দেখা যায়, শৈলাবাসের নির্জন সন্ধ্যায় শিল্পী সিরাজের অপূর্ব মানসী চিত্রা শিল্পীকে মানুষ সিরাজ হয়ে পেতে চায়। কিন্তু সিরাজ তার কাছেও ধরা দেয়না। প্রেমিকা চিত্রা অনুধাবন করে শিল্পী সিরাজ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাকেও ছেড়ে শিল্পী সিরাজ একসময় চিরসত্য অসুন্দর বেদনার পথে পা বাড়ায়। বিদায় বেলায় এই প্রথম শিল্পীর চোখ বেয়ে নেমে আসে অশ্রু। এই বেদনার মাঝেই শিল্পীর নবজন্ম কে উপলব্ধি করলো চিত্রকর সিরাজ। অর্থাৎ এই বেদনার মধ্য দিয়েই শিল্পী সিরাজের চিরন্তন শিল্পের পথ পরিক্রম করে।

‘শিল্পী’ নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় থাকা বিথী রানী মন্ডল বলেন, শিল্প আমাদের আনন্দ দান করে, কারণ তা ব্যক্তিস্বার্থের পরিধি অতিক্রমের মাধ্যমে আমাদের বৃহৎ জীবনের মুখোমুখি করে দেয়। যা ব্যক্তি জীবন ও সমাজ সাহিত্য ও শিল্পে রূপায়িত হয়, তাই শিল্পজাত আনন্দ আমাদের জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ‘শিল্পী’ নাটকের প্রেক্ষিতেই অনুধাবন কৃত যে শিল্পী তো হয় মানব জীবন ও সমাজ জীবন। তাই হেগেলের ভাষ্যে যিনি ইন্দ্রিয়ের অতীত সেই মহাসত্যকে ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য রূপদানের রূপবানের রূপদানের প্রয়াসই হল আর্টের পরমত্ব।

তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পী’ নাটকটিতেও বোঝানো হয়েছে, যা তার নিজের জীবন ও সমাজের সঙ্গে অর্থাৎ ভাষা বিশ্বাস আচার-বিচার প্রভৃতির মাধ্যমে অচ্ছেদ্য সম্পর্কের রহস্য জাল। শিল্পে শিল্পী শুধু নিজেকে নয়, সমাজকেও প্রকাশ করে। তাইতো শিল্পীসত্ত্বার সগৌরবে মানুষ বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং আপন সত্ত্বাকে উদঘাটনের জন্য পার্থিব ও সাংসারিক সম্পর্কের মোহ মায়া ত্যাগ করে শিল্পীসত্ত্বার আসন আবিষ্কার করতে চায় নবতর ভাবে। এ নাটকের চিত্রকর শিল্পী সিরাজই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

নাটকটিতে অঙ্গরচনায় সহকারী হিসেবে ছিলেন অনামিকা গাইন ও ইসরাত লামিয়া, পোশাক সমন্বয়কারী অনন্যা সিংহ ও ফৌজিয়া পিংকি, আবহ সংগীত পরিকল্পনায় ও সহযোগিতায় সৌরভ বিশ্বাস রুদ্র, অনন্যা ও পিংকি, মঞ্চ পরিকল্পনায় সহযোগী ও কোরিওগ্রাফি ইসরাত লামিয়া, শ্রাবন্তী রায়, কামরুন নাহার যুঁথি, ডেলা, দিয়া চৌধুরী ও ব্রতী অধিকারী, আলোক প্রক্ষেপণ সহযোগিতায় অনামিকা গাইন, পোস্টার পরিকল্পনায় খমক মন্ত্র ও সৌরভ বিশ্বাস রুদ্র, ভাঁজপত্র ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মারুফ। নাটকটিতে ড. কামালউদ্দিন খান, মো. আব্দুল হালিম প্রামাণিক, ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন, সঞ্জীব কুমার দে, রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা, আফরিন হুদা ও কৃপাকণা তালুকদারকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে। এছাড়াও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নাট্যকলা বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..