ওয়েব ডেস্ক: আদালত অবমাননার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। একই কারণে শেখ হাসিনার সঙ্গে হাজির হতে বলা হয়েছিল ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকেও। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ১০টায় তাদের হাজির হতে বলা হয়েছিল। তবে তারা হাজির না হওয়ায় আগামী ১৯ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও হাজির না হওয়ায় বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতে প্রসিকিউসনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ বলে ‘শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের’ একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সেটি হাসিনার বলে সত্যতা পায়। পরবর্তীতে এই বক্তব্যের বিষয়ে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে ১৫ মে’র মধ্যে তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৫ মে জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা হাজির না হওয়ায় প্রসিকিউসনের আবেদনে শেখ হাসিনাসহ দুজনকে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর নির্দেশক্রমে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এ এস এম রুহুল ইমরান স্বাক্ষরিত নোটিশটি ২৬ মে যুগান্তর ও নিউ এজ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর ১১(৪) ধারা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ কার্যপ্রণালী বিধিমালা-২০১০ এর ৪৫ বিধি অনুসারে অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিতির এই নোটিশে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি-১) চিফ প্রসিকিউটর আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন এবং অভিযোগের জবাব দাখিলের জন্য তাদের বরাবরে নোটিশ প্রেরিত হয়। যেহেতু নোটিশ সত্ত্বেও তারা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন নাই এবং কোনো জবাব দাখিল করেন নাই, সেহেতু আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকতর সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে তাদের পুনরায় নোটিশ প্রদান করা যাইতেছে ৩ জুন সকাল ১০ টায় ট্রাইব্যুনালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের জবাব বা বক্তব্য দাখিল করিবেন। অন্যথায় উক্ত ধার্য তারিখ অথবা পরবর্তী যে কোনো তারিখ তাদের অনুপস্থিতিতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচার কার্য সম্পন্ন হবে।’