আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম গাজায় সমুদ্রতীরবর্তী একটি জনপ্রিয় ক্যাফেতে দখলদার ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। এই ক্যাফেটি অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করতেন।
গাজার হামাস শাসিত সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দলগুলো আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া থেকে ২০ জনের মরদেহ এবং কয়েক ডজন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। ক্যাফেটি সৈকতের ধারে তাঁবু দিয়ে তৈরি একটি খোলা জায়গায় ছিল।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের ফলে একটি গভীর গর্ত সৃষ্ট হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
স্থানীয় একটি প্রোডাকশন কোম্পানির ক্যামেরাম্যান আজিজ আল-আফিফি বিবিসিকে বলেন, “আমি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ক্যাফেটির দিকে যাচ্ছিলাম, মাত্র কয়েক মিটার দূরে থাকতেই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আমার সহকর্মীরা, যাদের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হতো, তারা সেখানে ছিলেন। দৃশ্যটি ছিল ভয়াবহ। চারদিকে শুধু মরদেহ, রক্ত আর চিৎকার।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাক্টিভিস্টদের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র এলাকাটিতে আঘাত হানছে, যা একটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফুটেজে হামলার পরের দৃশ্য ধরা পড়েছে, যেখানে মাটিতে মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।
আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া গাজার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ইন্টারনেট, বসার জায়গা এবং কাজের পরিবেশ দেওয়ায় সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং দূরবর্তী কর্মীদের জন্য একটি সুপরিচিত স্থান হয়ে উঠেছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই হামলার আগে রাতভর গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েল একাধিক বিমান হামলা চালায়, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়।
স্থানীয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্ধারকারী দলগুলো পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং কয়েক ডজন আহত বেসামরিক নাগরিককে গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মার্চ মাসে পুনরায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে বড় এলাকা ছাড়ার নির্দেশ জারি করার পরই এই বোমাবর্ষণ করা হলো। এ ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে।
সূত্র : বিবিসি