বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৭ অপরাহ্ন
ওয়েব ডেস্ক: জাতীয়করণের দাবিতে টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া, মেডিকেল ও উৎসব ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে আংশিক সন্তুষ্টি জানালেও শিক্ষকরা বলছেন, সরকারি নিয়মে বেতনের শতাংশ অনুযায়ী বাড়িভাড়া এবং অন্যান্য দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হলে সেপ্টেম্বর থেকেই কর্মবিরতি ও লাগাতার আন্দোলনে নামবেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে শিক্ষক সমাবেশ নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে সচিবালয়ে অভিমুখে পদযাত্রা করলে প্রশাসনের অনুরোধে সেই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
সমাবেশে গত ১২ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা ২২ দিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সচিবালয়ে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা ও বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি নিয়মে– বাড়িভাড়া, মেডিকেল ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা ও সর্বজনীন বদলি চালুসহ এমপিওভুক্ত (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেছেন।
বিবৃতিতে জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, সমাবেশ চলাকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোটের ১০ সদস্যকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাবির ব্যাপারে আলোচনার জন্য নেওয়া হয়। আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষা উপদেষ্টা ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। তারা মন্ত্রণালয়ে জানান, জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের দাবির প্রেক্ষিতে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ, শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা এবং মেডিকেল ভাতা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করার ডিও লেটার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে গত ৭ আগস্ট পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ে এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে জোট সদস্য সচিব বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবশ্যই পার্সেন্ট অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া দিতে হবে। পার্সেন্ট অনুযায়ী না দিলে এমপিওভুক্ত শিক্ষা স্থবির হয়ে পড়বে।
এ সময় বাড়ি ভাড়া পার্সেন্ট অনুযায়ী দেওয়ার দাবি মেনে নেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তবে কমপক্ষে ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার জোর দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, এবছরের ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ থেকে জোটের ২২ দিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, মেডিকেল ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা ও শ্রান্তি বিনোদন ভাতা দেওয়ার ঘোষণা হয়েছিল। ইতোমধ্যে ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষকদের উৎসব ভাতা ২৫ থেকে ৫০ ভাগে উন্নীত করা হয়েছে। সেজন্য জোটের পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, মেডিকেল ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন এখনও জারি করা হয়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি জানান, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার প্রজ্ঞাপনসহ অন্যান্য দাবির বাস্তবায়ন এবং সর্বজনীন বদলি চালু না হলে আন্দোলনে নামবেন শিক্ষকরা।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—
১৪ সেপ্টেম্বর সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি; ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি; বিভাগীয় শহরে সম্মেলন এবং ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথাও জানান তিনি।
সমাবেশে দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন- এনসিপির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তসহ অন্যান্য নেতারা।