শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গ্রিস ও আলবেনিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি গুহার ভেতর বিজ্ঞানীরা ১ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি মাকড়সার বিশাল আস্তানার সন্ধান পেয়েছেন। একসঙ্গে এই বিপুল সংখ্যক মাকড়সার উপস্থিতি নিঃসন্দেহে অনেকের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু গবেষক দলটি এই আবিষ্কারে বিস্ময় ও মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন।
জীববিজ্ঞানী ইস্তভান উরাকের নেতৃত্বে কয়েকজন গবেষক ১৭ অক্টোবর প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে সালফার কেভ নামের একটি গুহায় মাকড়সার বিশাল এই আস্তানা নিয়ে অবিশ্বাস্য অনুসন্ধানের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মাকড়সাগুলোর তৈরি করা সুবিশাল জালটি গুহার প্রায় ১০০ বর্গমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। গুহার ভেতরের ছবিগুলোতে দেখা যায়, মাকড়সার ঘন জাল গুহার দেওয়াল ও ছাদ ঢেকে ফেলেছে।
গবেষকদের মতে, মাকড়সার এই আস্তানাটি দুটি ভিন্ন প্রজাতির মাকড়সার সহাবস্থানের এক অনন্য উদাহরণ।
গুহার ভেতর যে বিশাল জালটি তৈরি হয়েছে তা প্রধানত প্রায় ৬৯ হাজার সাধারণ ও নিরীহ বার্ন ফানেল উইভার আর প্রায় ৪২ হাজার প্রিনেরিগন ভেগানস বা বামন উইভার একযোগে তৈরি করেছে।
আশ্চর্যজনক তথ্য হলো— ফানেল উইভারদের সাধারণত বামন উইভারদের শিকার করার কথা, কিন্তু গবেষকরা বিশ্বাস করেন, গুহার সীমিত আলো এবং খাবারের প্রাচুর্য তাদের মধ্যে এই সহনশীল বা ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ প্রকৃতির জন্ম দিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা গুহাটির ভেতরের ইকোসেস্টেম বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে, এটি একটি অত্যন্ত সরল খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে টিকে আছে। প্রথমে, গুহার সালফারের প্রাচুর্যকে জারিত (অক্সিডাইজ) করতে সক্ষম মাইক্রোবিয়াল বায়োফিল্ম তৈরি হয়। এই বায়োফিল্মগুলো নন-বাইটিং মিজ নামক মাছির শূককীট দ্বারা হজম হয়। শূককীটগুলি পূর্ণাঙ্গ মাছিতে পরিণত হলে, তা হাজার হাজার মাকড়সার খাদ্যে পরিণত হয়।
গুহায় শেডেড অর্ব উইভার নামের আরেকটি প্রজাতির মাকড়সার সন্ধান পাওয়া গেলেও, তাদের একাকী প্রকৃতির কারণে তারা গুহার বাকি মাকড়সার থেকে বিচ্ছিন্ন।
যদিও এই পুরো ইকোসিস্টেম নিয়ে আরও গবেষণা চলছে, গবেষকদলের প্রধান উরাক এটিকে তাদের জন্য অসাধারণ এক সাফল্য বলে মনে করছেন।
সূত্র: সেভেন নিউজ।