কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: গত ৫ দিনে কুড়িগ্রামে বন্যার পানিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার মোগলবাসা এলাকার কানাই রায়ের দুই বছরের কন্যা শিশু কথা রায় বানের পানিতে পড়ে মারা যায়। এর আগে ২৮ জুন রবিবার সকালে বানের পানিতে পড়ে চিলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল গ্রামের জাহেদুল ইসলামের পুত্র শান্ত ইসলাম (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের লোকজন জানায়, শান্ত কলার ভেলায় করে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। একই দিনে একই উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বয়লার পটল গ্রামের জামাল উদ্দিন (৫৫) বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
এদিকে গত সোমবার (২৯ জুন) নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের আমীর হোসেনের পুত্র বেলাল হোসেন (৮) বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন। বাড়ির পাশে দোকান থেকে বিস্কুট কিনতে গিয়ে রাস্তার পাশে বন্যার কারণে ভেঙে যাওয়া গর্তে পড়ে তার মৃত্যু হয়। পরেরদিন মঙ্গলবার মরা যায় উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের জানজায়গির গ্রামের সাইফুল ইসলামের পুত্র মোস্তাকিম (১৪ মাস)। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজেদের ঘরে বন্যার পানিতে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও এখনো প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। উঁচু জায়গা এবং স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষ বাড়িতে ফিরতে পারেনি। প্লাবিত এলাকায় খাবার, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানী ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সূত্রে জানাযায়, জেলার ৩টি পৌরসভা ও ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ৩৫৭টি গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসছে। ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন ৫শত পরিবার। এছাড়াও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানায়,পাট, আউশ, আমন বীজতলা, চিনা,কাউন, তিল, সবজিসহ ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৬ হাজার ৮৩৫ হেক্টর।
জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, দুর্গত মানুষদের সহায়তায় ৩০২ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।