ঢাবি সংবাদদাতা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন- মা যেমন আদর-স্নেহ দিয়ে সন্তানকে পূর্ণ ও পরিণত করে তোলেন, আত্মপ্রত্যয়ী ও মর্যাদাবোধে উদীপ্ত করেন তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালির জাতীয় জীবনের বিকাশে একই ভূমিকা রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালেবিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
পরে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ওই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই মাহেন্দ্রক্ষণকে আমরা জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারছি না। এই দুঃসহ অবস্থা কেটে যাবে এবং অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা আনন্দঘন ও বর্ণাঢ্যভাবে সকল উৎসব উদযাপন করব।
সভায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে যুক্ত হয়ে ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রসঙ্গ আন্দোলন ও সংগ্রাম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যদের মধ্য থেকে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয় আমার মাতৃসম প্রতিষ্ঠান। মা যেমন সন্তানকে আদর-স্নেহের পরশমণিতে পূর্ণ ও পরিণত করে তোলে, আত্মপ্রত্যয়ে সুদৃঢ় করে, মর্যাদাবোধে সিক্ত করে তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জাতির জন্য সেই ভূমিকা পালন করেছে।
আরেক সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন- বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জাতির জন্য যে ভূমিকা রেখেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার চেয়ে বেশি করেছে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতায় তিনি বলেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে এখন তিনটি সমস্যা প্রকট। গবেষণা ও প্রকাশনার অভাবে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। আরেকটি হলো লাইব্রেরি, যেখানে শিক্ষার্থী সঙ্কুলান হচ্ছে না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে অত্যাধুনিক করা প্রয়োজন। এ সময় বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিকে সামনে রেখে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগত মান উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, গবেষণার সম্প্রসারণ ও শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করাই হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের অঙ্গীকার। সভায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যুক্ত হন।