বিশেষ সংবাদদাতা:অবশেষে ময়মনসিংহ বিভাগের এর সাথে সিলেট বিভাগের সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ স্থাপিত হতে যাচ্ছে।এই মহাসড়ক নির্মাণে হাওর প্রধান ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের হাওরের বুকে নির্মাণ করা হবে ৯ কি.মি ফ্লাইওভার মহাসড়ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওর এলাকার প্রতি অত্যন্ত সহৃদয় জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ বলেছেন, হাওরের জীববৈচিত্র ও অপরূপ সৌন্দর্য্য রক্ষা করে সুনামগঞ্জ-ধর্মপাশা- নেত্রকোণা পর্যন্ত যুগান্তকারী সড়ক পথ হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘের ফ্লাইওভারের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজে সকলের সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাওর এলাকাকে উন্নয়নের জাতীয় ধারায় নিয়ে আসতে চান। হাওর এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর মমতা ও দরদ রয়েছে।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮ টায় ‘মুজিববর্ষ, ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য নাগরিক সেবা, উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে (ভার্চুয়াল) অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন এই সেমিনারের আয়োজন করে। রাত ১০টা পর্যন্ত এই সেমিনার চলে। এতে নিজ-নিজ বাসা ও দপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন সুনামগঞ্জ জেলার সকল সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ।সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মান্নান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশের উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। সবখানেই পরিবর্তন ও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ১০ বছরে দেশ অনেক এগিয়েছে। বাংলাদেশ আর আগের জায়গায় নেই। শেখ হাসিনার দক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বে এই পরিবর্তন এসেছে।
নিজেকে হাওর এলাকার সন্তান উল্লেখ করে পরিকল্পমন্ত্রী আরও বলেন, হাওর এবং হাওর এলাকার মানুষ এক সময় নানা কারণে অবহেলিত ছিলেন। শেখ হাসিনা হাওরকে আলোয় এনেছেন। সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতাল, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কাজ চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে, জেলা সদরে রেল লাইন আসবে। হাওরের উপর দিয়ে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা সড়ক নির্মাণের একটি বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এই সড়ক হবে দেশের একটি দৃষ্টিনন্দন ও মনোরম সড়ক। যে সড়কে ৯ কিলোমিটার ফ্লাইওভার হবে, এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা ফ্লাইওভার হাইওয়ে’। এই প্রকল্পের ফাইল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আমার টেবিলে আছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে আশা করছি এই প্রকল্পের ফাইল একনেক সভায় অনুমোদন লাভ করবে। এসব হচ্ছে হাওর এলাকার মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার মায়া আছে বলেই। তিনি সব সময় হাওরবাসীর পাশে আছেন। তাই তাঁর কাজে আমাদের সমর্থন, সহযোগিতা থাকা উচিত।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুহেল মাহমুদের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো, মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান, সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, হাওর ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা।
সেমিনারে নির্ধারিত বিষয় ছাড়াও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সংসদের প্যানেল স্পিকার মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে অতিমাত্রায় বৃষ্টি, একই সঙ্গে সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ হওয়ায় সুনামগঞ্জের গোটা জেলা প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চেরাপুঞ্জির পাদদেশের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায়।