1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

করোনার চিকিৎসা থেকে বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য।

  • Update Time : সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৩৯ Time View

গত সপ্তাহে প্রথম আলোয় করোনাভাইরাস চিকিৎসার জটিলতা নিয়ে লিখেছিলাম। গত এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটে গেল অনেক ঘটনা, জানা গেল অনেক নতুন তথ্য। পাওয়া গেল আশার নতুন আলো।

বড় খবর হলো, কোভিড-১৯–এর মৃত রোগীদের পোস্টমর্টেম বা শবব্যবচ্ছেদ থেকে জানা গেল অনেক তথ্য, ভুল প্রমাণিত হলো আমাদের অনেক ধারণা। আমাদের ধারণা ছিল Cytokine storm বা ফুসফুস থেকে তৈরি পদার্থ ফুসফুসকে ধ্বংস করছে। এখন আমেরিকা ও ইউরোপের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ব্লাড ক্লটের (embolism) কারণে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই তথ্যের ফলে করোনা-১৯–এর চিকিৎসার পদ্ধতি ও কৌশল বদলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রাপ্ত নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এখন ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে আটকে থাকে, এ কারণে অক্সিজেন হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে আটকাতে পারে না। এ জন্যই শ্বাসকষ্ট হয়। আর সে কারণেই উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন দিলে উপকার পাওয়া যাচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে, যাদের থ্যালাসেমিয়া (যা একধরনের রক্তের সমস্যা) রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের প্রোটিন পরিবর্তিত হওয়ার কারণে করোনাভাইরাস হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না।এর উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ ইতালির একটি ছোট্ট শহর, সেখানে বহু লোকের এই থ্যালাসেমিয়ার সমস্যা আছে, সেখানে করোনার সংক্রমণ নেই। বাংলাদেশের অনেক মানুষের এই থ্যালাসেমিয়ার সমস্যা আছে। এর ফলে বাংলাদেশের বহু লোক এই রোগের সংক্রমণ থেকে অব্যাহতি পাবে। আরও ধারণা করা হচ্ছে, যাঁরা সমুদ্র থেকে অনেক উঁচুতে থাকেন (যেমন নেপাল), সেখানে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেশি থাকায় তাঁদের এই ভাইরাসের সংক্রমণ অনেক কম হবে। নতুন এই তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, যেসব ওষুধ এই ভাইরাসকে রক্তের সঙ্গে আটকাতে প্রতিরোধ করে (যেমন: Hydroxyclochloriquine, zinc sulphate, ascorbic acid বা ভিটামিন সি), এই রোগ প্রতিরোধে তা কার্যকর হতে পারে।

হার্ভার্ড থেকে প্রকাশিত নামকরা মেডিকেল পত্রিকা নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহুল আলোচিত ওষুধ Hydroxycholoquine কার্যকর নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে ভালোর চেয়ে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। ২৩ জন মারাত্মকভাবে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর ওপর পরিচালিত পরীক্ষার পরে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এ খবর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এই কারণে যে এই মুহূর্তে আমরা বহু রোগীকে এই ওষুধ দিয়ে নিরাময়ের চেষ্টা করছি। অনুমান করা হচ্ছে এই রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক পর্যায়ে Hydroxycholoquine কার্যকর হতে পারে। কিন্তু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা আর কার্যকর হয় না। এই মুহূর্তে শতাধিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে এই ওষুধের কার্যকারিতা নির্ধারণ করার জন্য। খুব শিগগির এর ফলাফল আমরা জানতে পারব।

এই সপ্তাহের বড় সুখবর হলো রেমডেসিভির নামের একটি ওষুধ এই রোগের নিরাময়ে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিকাগোতে এই ওষুধ ব্যবহার করে ভালো হয়ে গেছে বেশ কিছু করোনা রোগী। এই ওষুধটির ব্যাপারে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই আশাবাদী ছিলেন। সীমিত আকারে হলেও এখন প্রমাণ মিলেছে যে এর ব্যবহার করোনাভাইরাসকে দ্রুত মেরে ফেলে। এই তথ্য সত্যি প্রমাণিত হলে বহু রোগীকে এর প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব হবে।

শেষ কথা, কোভিড-১৯–এর চিকিৎসা–কৌশল বিতর্কিত এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল। নতুন কিছু পরীক্ষামূলক চিকিৎসা শুরু হচ্ছে। এর অন্যতম হলো এক্সচেঞ্জ ট্রান্সফিউশন, যার মাধ্যমে রক্তের ভাইরাসযুক্ত হিমোগ্লোবিন বের করে দিয়ে নতুন রক্ত দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে দ্রুত ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা জানা যাবে খুব শিগগির।

সবশেষে, সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের রক্ত থেকে নেওয়া অ্যান্টিবডি (ইমিউনোগ্লোবিন) দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের ক্ষেত্রে। এর ব্যবহার এখনো সীমিত, কারণ এটা ব্যাপকভাবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে সব ওষুধই পরীক্ষামূলক ও প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে সঠিক ওষুধ কোনটি, সে তথ্য প্রকাশিত হওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।

ডক্টর আমর আশরাফ
নিউইয়র্কে কর্মরত সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..