নিজস্ব প্রতিবেদক: ধুঁকতে থাকে শেয়ারবাজারে হঠাৎ করেই জেগে উঠেছে। পতনের ধারা কাটিয়ে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলছে মূল্য সূচকের। তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেন আবারও গতি ফিরে পেয়েছে। এতে শেয়ারবাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
তারা বলছেন, শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা ছিল আস্থার সংকট। আস্থার সংকটের কারণেই শেয়ারবাজার এতো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিএসইসির এমন ভূমিকায় শেয়ারবাজারের ওপর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে থেকেই শেয়ারবাজারে মন্দা চলছে। ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজি হারিয়ে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বাজারের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এমন পরিস্থিতিতেই মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়। ফলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। এতে প্রায় সব বিনিয়োগকারী বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েন।
তারা বলছেন, কয়েক দিন ধরে শেয়ারবাজারে টানা উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তবে এরপরও লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। ভয়াবহ ধসের কবলে পড়ে যে পরিমাণ লোকসান হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে। তবে নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে তা অব্যাহত থাকলে শেয়ারবাজারে সুদিন ফিরে আসবে এবং লোকসান কাটিয়ে বিনিয়োগকারীরা মুনাফার মুখ দেখবেন। ধুঁকতে থাকা শেয়ারবাজার মূলত ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে গত ৭ জুন থেকে। মাঝে মধ্যে ছোট দরপতন হলেও মূলত ওই সময় থেকেই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে শেয়ারবাজার। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৩৪৬ পয়েন্ট। অবশ্য এর মধ্যে শেষ সাত কার্যদিবসেই সূচকটি বেড়েছে ২১৯ পয়েন্ট।
আস্থা সংকটে ধুঁকতে থাকা শেয়ারবাজারে দেখা দেয় মারাত্মক লেনদেন খরা। দরপতন ঠেকাতে বিএসইসির আগের কমিশন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করে দিলে এই লেনদেন খরা শুরু হয়। ডিএসইর লেনদেন কমে ৫০ কোটি টাকায় নেমে আসে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পরও ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত রেখেছে। তবে তলানিতে নেমে যাওয়া লেনদেন আবার ৬০০ কোটি টাকায় উঠে এসেছে। ঈদের পরের দুই কার্যদিবস মঙ্গলবার ৬৭৬ কোটি এবং সোমবার ৬৭২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আর ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৮০ কোটি টাকার।