কক্সবাজার সংবাদদাতা: কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মো ,রাশেদ খান হত্যার পর ওই রাত এবং আগে ও পরের মোট ১১ দিনের টেকনাফ মডেল থানার সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েব হওয়ায় খবর পাওয়া গেছে। সীমান্ত এলাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি থানার ফুটেজ উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে রহস্যের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।এইদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্টরা এখন ওই ফুটেজ উদ্ধারে নেমেছেন। কেননা এই আলোচিত চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্তে স্বার্থে থানার সিসি ফুটেজের যথেষ্ট গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আর যদিওবা ফুটেজে কোনো কিছু না থাকলে তা উধাও হয়ে যাওয়ার কথা নয় বলেও তদন্ত কাজে নিযুক্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সংশ্লিষ্টদের ধারণা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ফুটেজ উধাও করা হয়েছে। এ বিষয়েও হেফাজতে থাকা আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ১০ জনকে র্যাব হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যহত রয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত এবং নন্দ দুলালকে সাত দিনের র্যাব হেফাজতে নেয়া হয়।এর আগে থেকেই র্যাব হেফাজতে আছেন আরও চার পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী। তদন্ত কাজে নিযুক্ত সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য অনুসারে ঘটনার রাতেই টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের গতিবিধির উপর তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ হিসেবে ওই রাতে ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন নাকি থানা থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এই প্রশ্নের উত্তর তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন তদন্ত কাজে নিযুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে যে বিপদ আঁচ করতে পেরে প্রদীপ কুমার দাস সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করে ফেলতে পারেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের।
সিসিটিভির দায়িত্বে নিয়োজিত টেকনিশিয়ান মো. আলম সাক্ষরিত এক প্রত্যয়নপত্রে এ তথ্য জানানো হয়। টেকনাফ মডেল থানার আরেক সধ্য প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল ফয়সলের নির্দেশে তার কক্ষে সংরক্ষিত সংরক্ষিত সিসিটিভি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
টেকনিশিয়ান মোঃ আলমের দেয়া মতামতের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ২৫ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত থানার ওসির কক্ষের কোনো ফুটেজ সংরক্ষিত পাওয়া যায়নি। ৩১ জুলাই কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
টেকনিশিয়ান মোঃ আলমের সাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে জানান, থানার পূর্বপাশে দেয়ালে সংরক্ষিত সিসিটিভি পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে কোন হার্ডডিস্ক নায়। তাই কোন ধরনের ফুটেজও পাওয়া যায় নাই।
তাছাড়াও পশ্চিম পাশ্বের সংরক্ষিত একটি ডিভিআর বক্স পরীক্ষা করে এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক পাওয়া গেলেও তা নষ্ট করে দেয়ার কারণে কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি বলেও সিসিটিভি টেকনিশিয়ান মোঃ আলম জানান ।