প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে হ্যারিকেন লরা আঘাত হেনেছে। দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন কয়েক লাখ বাসিন্দা। ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা ঝড়কে চতুর্থ শ্রেণীর বিপদজনক ঝড় হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির জাতীয় হারিকেন সেন্টার। খবর বিবিসির।
এর আগে আবহাওয়া অফিস জানায়, ক্যাটাগরি চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড় লরা ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ভয়াবহ ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল পূর্বাভাসে।
যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি হ্যারিক্যান লরা। টেক্সাস এবং লুইজিয়ানার ৫ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
যদি ঝড়ের গতি অব্যাহত থাকে তবে এটাকে দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্যটির প্রায় ৩ লাখ নাগরিক বিদুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। টেক্সাসের ৭৫ হাজার বাসায় বিদুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে।
হারিকেন লরা ২৪ ঘণ্টায় ৭০ শতাংশ শক্তি বৃদ্ধি করে তৃতীয় থেকে চতুর্থ পর্যায়ের বিপদজনক ঝড়ে পরিণত হয়েছে। টেক্সাসের ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে আবাস ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে দিতে নির্দশ দেয়া হয়েছে।
মার্কিন আবহাওয়া বিভাগ জানায়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় লুইজিয়ানার ক্যামেরোন ডিস্ট্রিকের কাছে কিছুটা দুর্বল হয়ে আঘাত হানে হ্যারিকেন লরা। ওইদিন ভোররাত চারটার দিকে লরা ক্যাটাগরি ৩ মাত্রার ঝড়ে পরিণত হয়। এসময় তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০৮ কিলোমিটার।
উপকূল থেকে ৪০ মাইল ভেতরে লরা তাণ্ডব চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর প্রভাবে বৃষ্টি এবং বন্যা কয়েকটদিন স্থায়ী হতে পারে বলে মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।
লুইজিয়ানার ৩ লাখ ৭০ হাজার বাড়িঘর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন ট্র্যাকিং সাইট পাওয়ার আউটেজ এ তথ্য জানিয়েছে। টেক্সাসে বিদ্যুৎহীন হয়েছে আরো ৮৫ হাজার ঘরবাড়ি। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরপরই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানায়। বলা হয়, জীবন বাঁচানোর জন্য তারা যাতে টেবিলের নিচে আশ্রয় নেয়। ম্যাট্রেস, বালিশ দিয়ে মাথা এবং শরীর ঢেকে রাখার আহ্বান জানানো হয়। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, স্থাপনা ভেঙে পড়ে কেউ মারাত্মক আহত না হয়।
টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম লুইজিয়ানার উপকূলীয় শহর লেক চার্লেলে ব্যাপক বৃষ্টি এবং বাতাস অব্যাহত রয়েছে। এসময় কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লরার আগে মারকোর আঘাত হানে ক্যারাবিয়ান অঞ্চলে। মারা যায় ২৪ জন। সোমবার মারকার প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাত এবং শক্তিশালী বাতাস বয়ে যায়।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন