প্রত্যয় নিউজডেস্ক: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কমিটি। তবে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডকে অনভিপ্রেত বলেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় কমিটির অধিকাংশ সদস্য অংশ নেন।
কমিটির সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা হত্যাকাণ্ড অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কোনোভাবেই এই ঘটনা কাঙ্ক্ষিত নয়। ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।
আলোচনা শেষে কমিটির পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। একইসঙ্গে সার্বক্ষণিক তথ্য সংগ্রহের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের বলেন, ‘কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিছুটা আলোচনা হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলাটি তদন্তাধীন বিধায় বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কমিটির সদস্যরা ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে সকল অর্জন মেঘাচ্ছন্ন হয়। তাই পুলিশ বাহিনীতে যেখানেই ত্রুটি আছে, সেখানেই নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।’
বৈঠক সূত্র জানায়, কমিটির সদস্যদের আলোচনার প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এটা তদন্তাধীন মামলা। এই অবস্থায় কোনো বক্তব্য দেয়া সঠিক হবে না। এতে তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে।
মন্ত্রী আরও বলেন, তদন্ত মোতাবেক অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। যারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে, তাদেরকেই বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।
সংসদ সচিবালয় জানায়, বৈঠকে চলমান কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ এবং অধীনস্থ অন্যান্য সংস্থাসমূহের গৃহীত সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও অন্যান্য কার্যক্রমের আলোকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এ বিষয়ে আলোচনা শেষে পুলিশ সদস্যদের আবাসিক সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্ট জোন বা ক্যাম্পাস প্রয়োজনে বহুতল ভবন নির্মাণ করে আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করণের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে দেশব্যাপী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরও গতিশীল ও জোরদার করার লক্ষ্যে বিএসটিআই’র আদলে ডোপটেস্ট ও বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার একটি পৃথক প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়। আর মাদক সংক্রান্ত মামলার আসামিরা যাতে ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হতে না পারে সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকার জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন- সংসদীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকু। বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মো. হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, মো. ফরিদুল হক খান ও পীর ফজলুর রহমান এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।