প্রত্যয় নিউজডেস্ক: বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকার ‘ড্রীম লাইফ’ নামে এক মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মচারীদের মারধরে সুমন খান (৩৫) নামে এক মাদকাসক্ত যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের মালিকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন খান নগরীর রূপাতলী রেডিও স্টেশন এলাকার মৃত ছাত্তার খানের ছেলে। আটককৃতরা হলেন- ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মচারী উজ্জ্বল সমাদ্দার, মো. রায়হান, ফজলে রাব্বি, বায়জিদ হোসেন ও আবুল কালাম।
নিহত সুমন খানের স্বজনরা জানান, সুমন খান প্রায় সাত মাস আগে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। ছয় মাস আগে পরিবারের সদস্যরা তাকে নগরীর রূপাতলী এলাকার ‘ড্রীম লাইফ’ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করেন।
বুধবার সকালে সুমন ওই কেন্দ্র থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে কেন্দ্রের কর্মচারীরা সুমনের বাড়িতে আসেন। এ সময় সুমন বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে কর্মচারীরা তাকে ধরে ফেলেন। ধস্তাধস্তি হয়। এতে কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সুমনকে মারধর করেন।
এক পর্যায়ে সুমন মাটিতে পড়ে গেলে তার হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর বুক ও গলার ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় সুমনের। কিছুক্ষণের মধ্যে সুমন নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
এরপর পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এসে সুমনকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখে সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে সুমনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী মাদক নিরাময় কেন্দ্রের পাঁচজনকে ধরে ফেলে। পরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করে এলাকাবাসী।
সুমনের মা খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের কর্মচারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তাদের বারবার নিষেধ করার পরও সুমনকে মারধর করে যাচ্ছিল। আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, সুমনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদক নিরাময় কেন্দ্রের পাঁচ কর্মচারীকে পুলিশ আটক হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।