নিজস্ব প্রতিবেদক: ১২ বছর পর জন্মদিনটি দেশের মাটিতে কাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রতিবছর জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কারণে জন্মদিনের সময় তিনি বিদেশে থাকেন। তিন মেয়াদের প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগের বছরের জন্মদিনও তার যুক্তরাষ্ট্রে কাটে। তবে, সফরসূচি ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থানগত কারণে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে তার জন্মদিনগুলো কেটেছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জাতিসংঘের ৭৫তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এবার দেশে থেকেই সম্মেলন অংশ নিয়েছেন।
দেশে থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ঘটা করে তার জন্মদিন পালিত হচ্ছে না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় তিনি কোনও আনুষ্ঠানিকতা না করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সীমিত পরিসরে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়া মসজিদে মিলাদসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষভাগে জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কারণে সেখানেই জন্মদিন কাটে তার। অবশ্য এরমধ্যে দু-একটি জন্মদিনের সময় দেশের পথে যাত্রা করে বিমানেও কেটেছে।
২০০৮ সালের জন্মদিনটিও শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রে কাটে। ওয়ান-ইলেভেনের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ১১ মাস কারাবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১২ জুন তিনি চিকিৎসার স্বার্থে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগমুহূর্তে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি দেশে ফেরেন। ফলে সেই বছর তার ৬২তম জন্মদিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানদের সঙ্গে কাটান। ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থাকলেও তার জন্মদিন পালিত হয়নি। কারণ, তিনি ছিলেন সংসদ ভবন এলাকার সাবজেলে।
দ্বিতীয় দফা প্রধানমন্ত্রী (২০০৯ সালে) ও স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুর পরের এ জন্মদিনটি তিনি ওয়াশিংটনের বাল্টিমোরে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় পারিবারিকভাবে কাটান। ২০১০ সালে ৬৪তম জন্মদিনটি কাটে বিমানে। ২০১১ সালে ৬৫তম জন্মদিন পালন করেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে জন্মদিন তিনি নিউ ইয়র্কে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পালন করেন।
শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ৭০তম জন্মদিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়িতে কাটান এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করেন। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ সম্মেলনে যাওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর গলব্লাডারে অপারেশন করা হয়। ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালে অপারেশনের পর ওই সময় সেখানকার আবাসস্থলে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি ঘরোয়া পরিবেশে জন্মদিন কাটান।
প্রধানমন্ত্রী ৭২তম জন্মদিনে (২০১৮ সালে) নিউ ইয়র্কে হোটেলে ছিলেন। সেখানেই অনেকটাই আড়ম্বরহীনভাবে পালন করা হয় তার জন্মদিন। ৭৩তম জন্মদিনও নিউ ইয়র্ক কাটিয়েছেন তিনি।